বিশেষ প্রতিবদেনঃ দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু।
কিন্তু কে এই দ্রৌপদী মুর্মু?
দ্রৌপদী মুর্মুর রাজনৈতিক জীবন বেশ বৈচিত্রময়। ওড়িশার ময়ুরভঞ্জের বাসিন্দা দ্রৌপদী মুর্মুর জন্ম ১৯৫৮ সালের ২০ জুন একটি সাঁওতাল পরিবারে। মুর্মুর বাবা বিরাঞ্চি নারায়ণ টুডু ও তাঁর ঠাকুর্দা দু’জনেই তাদের নিজের গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় নিজের গ্রামেই। এরপর স্নাতক স্তরের পড়াশোনার জন্য তিনি ভুবনেশ্বরের ‘‘রমাদেবী ওমেনস্ কলেজে ভর্তি হন। মুর্মু তাঁর গ্রামের প্রথম মহিলা, যিনি কলেজে পড়ার জন্য গ্রাম থেকে ভুবনেশ্বর পাড়ি দেন।
পঞ্চায়েত থেকে শুরু হয় রাজনৈতিক জীবন
পড়াশোনা শেষ করার পর দ্রৌপদী মুর্মু ওড়িশা সরকারের সেচ বিভাগের ক্লার্ক হিসেবে কাজ শুরু করেন। কয়েক বছর চাকরি করার পর তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৯৭ সালে মুর্মু পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। এরপর কখনও পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ২০০০ সালে ওড়িশার মন্ত্রী হন তিনি। বিভিন্ন নির্বাচনে জয়ের পাশাপাশি বিজেপির বিভিন্ন পদ সামলেছেন। ২০১৫ সালে তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল পদে মনোনিত হন।
দুই ছেলে ও স্বামীর মৃত্যু পাল্টে দেয় দ্রৌপদী মুর্মুর জীবন
দ্রৌপদী মুর্মুর ব্যক্তিগত জীবন নানা ওঠাপড়ার সাক্ষী থেকেছে। কলেজে পড়ার সময় তাঁর পরিচয় হয় শ্যামচরণ মুর্মুর সঙ্গে। পরে তারা বিবাহ করেন। তারা দু’জন তিন সন্তানের বাবা-মা হন। দু’ই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তাদের পারিবারিক জীবন বেশ চলছিল। হঠাৎ এই সুখী জীবনে বাধ সাধে তাঁর এক ছেলের মৃত্যু। সেই শোক কাটিয়ে ওঠার ৪ বছরের মধ্যে ২০১৩ সালে তাঁর আরও এক ছেলের মৃত্যু হয়। এখানেই শেষ নয়। পরের বছর মৃত্যু কেড়ে নেয় তাঁর স্বামী শ্যামচরণকেও।
৫ বছরের মধ্যে দুই ছেলে আর স্বামীকে হারানোর যন্ত্রণা দ্রৌপদী মুর্মুকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলেছিল। এই দুর্ভাগ্যজনক যন্ত্রণার পর মুর্মু নিজের বাড়িটিকে দান করে দেন স্কুল গড়ার জন্য। এরপর একটি অনুষ্ঠানে নিজের চোখ দু’টি দান করার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। দ্রৌপদী মুর্মুর পরিবার বলতে এখন তাঁর মেয়ে ইতিশ্রি মুর্মু এবং জামাই গণেশ হেমব্রম। মেয়ে ইতিশ্রি ওড়িশার একটি ব্যাঙ্কে কর্মরত।