পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অবসাদ যে শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে পৌঁছতে পারে সেই ঘটনারই সাক্ষী থাকল দিল্লির বসন্ত বিহার। স্বামীর মৃত্যুর পর নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার শেষ ইচ্ছে টুকু হারিয়ে ক্রমশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিল ওরা তিনি। ফ্ল্যাটের একটি আবাসন থেকে উদ্ধার হয়েছে মা সহ তার দুই মেয়ের মৃতদেহ।
দিল্লিতে বসন্ত বিহারে তিন মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের আসে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেখানে পুলিশ জানিয়েছে, বসন্ত বিহারের ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে মঞ্জু শ্রীবাস্তব (৫৫), মেয়ে অঙ্কিতা(৩০),অংশুতা (২৬) শ্রীবাস্তবের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। গত বছরেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান মঞ্জুর স্বামী উমেশ শ্রীবাস্তব। এর পরেই আর্থিক সংকট থেকে বিষন্নতা, গ্রাস করে শ্রীবাস্তব পরিবারকে।
তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে আসে বেশ কিছু তথ্য। জানা যায়, আর্থিক সংকটে ভুগতে থাকা এই পরিবারটি নিজেকে শেষ পরিকল্পনা শুরু করে অনেক আগে থেকেই। ইউটিউবে নিজেকে শেষ করে ফেলার ভিডিও দেখতেন মা ও দু মেয়ে মিলে। গত শনিবার রাতে, মঞ্জু এবং তাঁর দুই মেয়েকে তাদের নিজেদের বাড়িতে থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, বাড়িতে আংশিক খোলা গ্যাস সিলিন্ডার এবং সমস্ত জানালা ফয়েল দিয়ে সিল করা অবস্থায় দেখা যায়। যে ঘরে তাঁদের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল সেখানে তিনটি ছোট কয়লাও জ্বালিয়ে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরেই মৃত্যুর পরিকল্পনা করেই তারা এই কাণ্ড ঘটায়। যাতে তাদের কোনওভাবেই বাঁচানো না যায়, সেই ব্যবস্থা করে রেখেছিল তারা। ইউটিউবে ভিডিও দেখে অনেক কিছু রপ্ত করেছিল মা ও দুই মেয়ে।
মৃতদের একজনের লেখা একটি সুইসাইড নোট ঘরের দেওয়াল থেকে উদ্ধার হয়, যাতে লেখা ছিল, “ভেতরে কার্বন মনোক্সাইড রয়েছে। আমরা বাঁচতে চাই না বলে আমাদের বাঁচানোর চেষ্টা করবেন না। বাঁচালে আমাদের মন ও মাথার ক্ষতি হতে পারে। এটা বেঁচে থাকা আর মরার চেয়েও খারাপ। আমরা অনুরোধ করছি আপনারা আমাদের বাঁচানোর চেষ্টা করবেন না। বরং নিজেকে বাঁচান।”
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি মোবাইল ফোন। সেটিকে ইতিমধ্যেই ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমরা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা আট নয়টি সুইসাইড নোট ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাব। হাতের লেখার সঙ্গে মিলিয়ে দেখব তিনজনের মধ্যে কে এই চিঠি লিখেছে।
তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শ্রীবাস্তব পরিবারের আত্মীয় ও স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ।