পুবের কলম প্রতিবেদক, বসিরহাট: এক অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল হাসনাবাদের বাসিন্দারা। সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে মায়ের মাথা ফাটালো মেয়ে। বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার টাকি পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডের হাসনাবাদ মধ্য বাজারের ঘটনা। আক্রান্ত বছর ৬৫ এর বৃদ্ধা পদ্মা নাথের স্বামী তিন বছর আগে মারা যান। দুই মেয়ে ও এক মাত্র ছেলের বিবাহ হয়ে গিয়েছে। বড় মেয়ে মৌসুমী দত্ত টাকির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তপাড়ায় শ্বশুরবাড়ি থাকেন। বাবার বিশাল সম্পত্তি আগেই মা, ছেলে ও দুই মেয়েকে সমান ভাগে ভাগ করে দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি মায়ের। ১০ কাটা জমির উপর মায়ের বসতবাড়িটা মা মেয়েকে লিখে দিচ্ছেন না, এই নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত। গত দু’বছর ধরে মেয়ে মৌসুমীর সঙ্গে মা পদ্মা নাথের একাধিকবার বচসা গন্ডগোল হয়। বেশ কয়েকবার ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।, এই নিয়ে সালিশি সভা বসলেও সমাধানসূত্র মেলেনি বলে অভিযোগ। এদিন হঠাৎই মেয়ে মায়ের বাড়িতে চড়াও হয়ে মাকে বেধড়কভাবে লাঠিপেটা করে, এর ফলে তার মাথা ফেটে যায়, অন্যদিকে হাতও ভেঙে যায়। এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে মেয়েকে ধরে ফেলে তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
মা পদ্মা নাথের অভিযোগ, “ওদের বাবার জমি সমান ভাগে ভাগ করে দিয়েছি। আমার জীবনের শেষ সম্বলটুকু কেড়ে নিতে চাইছে মেয়ে। তাই প্রতিবাদ করলে মেয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করে আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। এই অকথ্য মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার আমি বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি মেয়ের বিরুদ্ধে।” মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মৌসুমিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মা পদ্মা নাথ মেয়ের হাতে আক্রান্ত হয়ে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মেয়ে মৌসুমিকে শুক্রবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এক ব্যতিক্রমী অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকলো হাসনাবাদ।
এতদিন খবরের শিরোনামে নজরে আসত, ছেলের হাতে আক্রান্ত হত মা। অমানবিকতার পরিচয় দিয়ে এবার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল, মেয়ের হাতে আক্রান্ত হলেন স্বামীহারা বৃদ্ধা মা।