দেবশ্রী মজুমদার,বোলপুর, নভেম্বর ২৪: ন্যাকের প্রতিনিধিদের বিশ্বভারতী পরিদর্শনকালে বিক্ষোভ দেখালো এলাকার হস্তশিল্পী ও পৌষ মেলা বাঁচাও কমিটি। ন্যাকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করার আবেদনও জানিয়েছেন তারা।
২০১৫ সালে ন্যাশনাল এসিসমেন্ট এণ্ড এক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (NAAC) রিপোর্টে ‘বি গ্রেড’ পেয়েছিল বিশ্বভারতী। যা নিয়ে সে সময় নিন্দার ঝড় উঠেছিল শিক্ষামহলে৷ এছাড়া, সম্প্রতি এনআইআরএফ-র রিপোর্টেও শিক্ষার মান কমেছে বিশ্বভারতীর। প্রসঙ্গত, এই ন্যাকের নির্ধারিত মানের উপরেই নির্ভর করেই আর্থিক সাহায্য পায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। সে কারণে
এর আগে ২০১৫-তে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল বিশ্বভারতীকে। তাই এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষার মান উন্নয়ন করা একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ন্যাকের প্রতিনিধিরা আসার আগে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷ সমস্ত ভবন পরিচ্ছন্ন সহ নতুন বোর্ড লাগানো হয়েছে৷ মূলত সে কারণেই বিশ্বভারতীর তরফে জোর দেওয়া হচ্ছে সংগীত ভবন, রবীন্দ্র ভবন এবং বেশ কয়েকটি হস্টেলের মান বাড়ানোর উপর। পাশাপাশি, এই প্রতিনিধিদলের জন্য বিশ্বভারতীর লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। এবার বিশ্বভারতীর মান বাড়াতে নিজেদের প্রচেষ্টায় কোনও রকম ঘাটতি রাখতে চায় না বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বুধবার সকালের এই অবস্থান-বিক্ষোভ কর্তৃপক্ষের মাথাব্যাথার কারণ। এর ফলে ন্যাকের মূল্যায়নে বিরূপ প্রভাবও পড়তেও এই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতীর মান নির্ণায়ণের জন্য মঙ্গলবার রাতে শান্তিনিকেতনে এসে পৌঁছেছেন ঔরঙ্গাবাদের ডঃ বাবা সাহেব আম্বেদকর মারাঠওয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বি এ কোপাডে [Prof. B A Chopade]-এর নেতৃত্বে ন্যাকের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল। বুধবার সকাল থেকেই ন্যাকের প্রতিনিধির দল বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা শুরু করেন।
সেই সময় বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গেট – ‘বলাকা’র উল্টোদিকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এবছর পৌষমেলা করা, ২০১৯ সালের পৌষ মেলার সিকিউরিটি ডিপোজিট ফেরতের দাবী, উপাচার্যের কাজের প্রতিবাদ সহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বিক্ষোভ দেখান এলাকার হস্তশিল্পী সহ শান্তিনিকেতনের কবিগুরু হস্তশিল্প সমিতি ও বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা।
যদিও একে বিক্ষোভ বলে মানতে নারাজ শান্তিনিকেতনের কবিগুরু হস্তশিল্প সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা। তিনি বলেন, “আমরা হস্তশিল্পীরা ন্যাকের প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি। আপনারা জানেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আত্মশক্তি’র কথা বলেছিলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ‘আত্মনির্ভর ভারত’, ‘ভোকাল ফর লোকাল’ বলেছেন। কিন্তু বিশ্বভারতীর মতো কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, হস্তশিল্প ও শিল্পীদের শেষ করে দেবার, তাদের দোকান তুলে দেবার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরা এর প্রতিবাদ করছক।”
“বিষয়টি বিস্তারিত জানাতে আমরা ন্যাকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছি। এখনো পাই নি। তবে আমরা আশাবাদী