পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : গত বছর উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। দাঙ্গা উল্কাগতিতে ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের তীব্র মুসলিম বিরোধী মন্তব্যকেই দায়ী করে বিরোধীরা। শুধু তাই নয় ঠাকুর ও তাঁর সঙ্গিদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা সংগঠিত করা ও মদদ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। ঠাকুর ছাড়াও বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র– প্রবেশ ভার্মা– অভয় ভার্মা প্রমুখদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ প্রভাবশালী বিজেপি নেতা হওয়ার কারণে পুলিশ প্রথমে ঠাকুর-মিশ্রদের বিরুদ্ধে এফআইআর-ই নিতে চায়নি। পরে বিতর্কের মুখে পড়ে পুলিশ এফআইআর দায়ের করলেও তা ছিল চূড়ান্ত পক্ষপাতদুষ্ট।
দিল্লি দাঙ্গা মামলায় শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি হাইকোর্টকে বলেছে– অনুরাগ ঠাকুর– কপিল মিশ্রদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের বিষয়টি নিয়ে দ্রুততার সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে। দিল্লি দাঙ্গায় প্ররোচণামূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগে ঠাকুর– মিশ্রদের বিরুদ্ধে যথাযথ এফআইআর দায়ের করার জন্য একটি পিটিশন দাখিল হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্টকে এই নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
প্রবীণ আইনজীবী কলিন গনসালভেজের নেতৃত্বে পিটিশনটি দাখিল হয়। সেখানে বলা হয়– তাঁরা দিল্লি হাইকোর্টের উপর থেকে আশা হারিয়ে ফেলছেন। কারণ– নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও মামলার প্রক্রিয়ায় বিলম্ব করে চলেছে হাইকোর্ট। পিটিশনে আরও বলা হয়েছে– এটি একটি অত্যন্ত সরল ও সোজাসাপ্টা বিষয় এফআইআর দায়ের করার ক্ষেত্রে। বিদ্বেষ ভাষণ দেওয়ার যে ভিডিয়ো-প্রমাণ রয়েছে তার ভিত্তিতে এফআইআর করা যায়। কিন্তু– বিচার প্রক্রিয়ায় যেভাবে বিলম্ব হচ্ছে তা অযৌক্তিক।
আইনজীবী আরও বলেন– ২০২০ সালের মার্চে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিদ্ধান্ত ঘোষণার জন্য। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের উচিত বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো। এর পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে– যেহেতু মামলাটি হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে তাই তারা সংশ্লিষ্ট আদালতকে শুধু মামলার প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার জন্য বলতে পারে।
এদিকে– দিল্লি দাঙ্গা নিয়ে ভারতের সংখ্যালঘু কমিশন ইতিমধ্যে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। সেখানে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে ঠাকুর-মিশ্রকে। বলা হয়েছে– কপিল মিশ্রর বিদ্বেষ ভাষণের জন্যই রাজধানী রক্তাক্ত হয়েছে। ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তোলার পাশাপাশি– ‘মোদিজি মুসলিমদের কোতল করুন’ প্রভৃতির মতো স্লোগান তোলা হয়েছিল। সংখ্যালঘু কমিশনের ৯ সদস্য কমিটি রিপোর্টটি দাখিল করে। সেখানে কপিল মিশ্রকে দাঙ্গার জন্য দায়ী করা হয়।