পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ভারীবৃষ্টির জন্য বিপর্যস্ত বেঙ্গালুরুর সাধারণ জনজীবন।তারই মধ্যে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ২৩ বছরের এক তরুণীর। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।মৃত তরুণীর নাম আখিলা, সোমবার রাতে বেঙ্গালুরুর হোয়াইটফিল্ডের সিদ্দাপুরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান ওই তরুণী।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত ওই তরুণী একটি প্রাইভেট স্কুলে অফিস প্রশাসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথেই এই দুর্ঘটনা ঘটে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। শহরের মৌর্য বেকারি এলাকায় জল ভরা রাস্তায় কোনও ভাবে তাঁর স্কুটির ভারসাম্য হারায়। হাতের সামনে একটি বিদ্যুতের খুঁটি পেয়ে সেটিকেই আকড়ে ধরেন। যেটি আগে থেকেই জলে ভিজে বিদ্যুৎবাহী হয়েছিল। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে হাত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে পড়ে যান। পথচারীরা তাকে দ্রুত বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেয়েটির পরিবার-পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। মেয়েটির বাবা-মা এবং এলাকার বাসিন্দারা স্থানীয় নাগরিক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে এদিন বলেন, তাদের উদাসীনতা একটি তরতাজা জীবন কেড়ে নিয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ।
ব্রুহাত বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে (বিবিএমপি) চিফ কমিশনার তুষার গিরি নাথ সোমবার বলেছেন যে ১৯৭১ সালের পর এই বছর বর্ষার বৃষ্টিপাত শহরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৯৮ সালে শহরে ৭২৫ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল। চলতি বছর, ১ জুন থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, শহরে ৭০৯ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আইএমডি আধিকারিকরা বলেছেন যে বেঙ্গালুরুতে রবিবার রেকর্ড পরিমাণ ১৩১.৬ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটি শহরটিতে রেকর্ড করা তৃতীয় সর্বোচ্চ এক দিনের বৃষ্টিতে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বাঙ্গালুরুর রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির জল ঘরে ঢুকেছে।তারমধ্যে সোমবার রাতের মুষলধারের বৃষ্টি আবারও মহাদেবপুর জোনের বেশ কয়েকটি অংশে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। কেআর পুরমের কাছে সাই লেআউট থেকে শুরু করে হোয়াইটফিল্ড, বেলান্দুর, ইয়ামলুর, ভার্থুর এবং সরজাপুর রোডের একাংশ জলের তলায় ডুবে গেছে।
এদিকে শহরে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন থাকার কারণে স্কুল কলেজ সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে অফিস যেতে হচ্ছে মানুষকে। এমনকি ট্র্যাক্টরের চেপে অফিসে পৌঁছতে দেখা যায় বহু মানুষকে। রাজ্যের বেশকিছু এলাকায় পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে বিকল্প উপায়ে পানীয় জলে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ নিচ্ছে প্রশাসন। অতিবৃষ্টিতে জল জমতেই নানা সমস্যা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। যেমন, ৫০০ টি ড্রেনের ওপর বেআইনি দখলদারির কারণে নিকাশি ব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কর্ণাটক সরকার জানিয়েছে, বন্যায় রাজ্যের মোট ৪৩০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।অন্যদিকে ২২৫ কিলোমিটার রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট ও ইলেকট্রিকের খুঁটি বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ।যদিও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি সামলা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।