পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: দলিত মুসলিম এবং দলিত খ্রিস্টানদের সেই সুবিধা এবং সুযোগ প্রদান করা যাবে না, যেগুলি তপশিলি জাতির লোকেরা ভোগ করে থাকেন। কারণ দলিত মুসলিম এবং দলিত খ্রিস্টানকে দলিত হিন্দুদের মতো বৈষম্য এবং অত্যাচারের শিকার হতে হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টকে এই কথাগুলি বলার পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকার আদালতে দায়ের করা তাদের বয়ানে বলেছে দলিত মুসলিম এবং দলিত খ্রিস্টানকে যেহেতু হিন্দু দলিতদের মতো বৈষম্য এবং অত্যাচার সহ্য করতে হয়নি, তাই সংবিধানের ১৯৫০ সালের নির্দেশে তপশিলি জাতির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ এবং শিখ সম্প্রদায়ের মানুষকে।
এটি মোটেই অসাংবিধানিক নয়। সুপ্রিম কোর্টে একটি আর্জি দায়ের করে বলা হয়েছে সংরক্ষণের সুবিধা সেই দলিতদেরও দেওয়া হোক যারা ইসলাম এবং খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন। এই মামলায় জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের হলফনামা বলেছে সরকারের কাছে এমন কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই যা প্রমাণ করে শত শত বছর ধরে হিন্দু দলিত সমাজ যাদের তপশিলি জাতি বলে ঘোষণা করা হয়েছে, তারা যেভাবে নির্যাতিত হয়েছেন, সেভাবে মুসলিম ও খ্রিস্টানরা কিন্তু নির্যাতন ভোগ করেননি।
আর্জিতে বিচারপতি রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের রিপোর্টকে ভিত্তি করে দাবি করা হয়েছে হিন্দু ধর্মের দলিতদের মতোই অন্যান্য ধর্মের দলিতরাও বহু যুগ ধরে অত্যাচারিত হয়ে এসেছেন। তাদেরও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। সেই আর্জিতে এই দাবিও করা হয়েছে যে তপশিলি জাতি ও উপজাতি কমিশনও একই মত প্রকাশ করেছে যা কেন্দ্রীয় সরকারের মতের সঙ্গে ভিন্ন। মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি এস কে কাউল, বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি বিক্রমনাথের বেঞ্চে।
এই বেঞ্চকে কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, ১৯৫০ সালের সরকারি নির্দেশ কোনও মতেই অবৈধ বা অসাংবিধানিক নয়। কারণ, হিন্দু দলিতদের মতো মুসলিম ও খ্রিস্টানদের অস্পৃশ্যতার যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়নি। তাছাড়া মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা ওবিসি’র ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। তারা ন্যাশনাল ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভালপমেন্ট কর্পোরেশনের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় মন্ত্রকের হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা সরকারের সেই সুযোগ-সুবিধাও পান যেগুলি সংখ্যালঘুদের জন্য ঘোষণা করা হয়।
কেন্দ্রীয় সরকার আদালতকে জানিয়েছে, সরকার তিন সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছে। এই কমিশন খতিয়ে দেখছে দলিত মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের তপশিলি জাতির অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না। বাদীপক্ষের উচিত কমিশনের রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা। রিপোর্ট আসার পরেই সরকার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।