পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গুজরাতে মোরবি জেলায় অভিশপ্ত দুর্ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণ বাঁচালেন জিগ্নেশ ও তার সঙ্গীরা। প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জনের মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। সেনাবাহিনী, পুলিশ প্রশাসন উপস্থিত হওয়ার আগেই নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন জিগ্নেশ। জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন তার সঙ্গীরা। ততক্ষণে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে ঝুলন্ত সেতুটি। অনেকে কেবল তার ধরে ঝুলছে বাঁচার আশায়।
সেইসময় জিগ্নেশ তার সঙ্গীদের বলেন, ভাঙা সেতুর উপর উঠে যেতে। বাঁচাতে অনেকেই নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আর যাঁরা লাফাতে পারেননি তার অসহায় মানুষগুলির দড়ি ছুঁড়ে দেন। নিজের জীবন তুচ্ছ করে ৮০ থেকে ৯০ জনের জীবন বাঁচিয়েছেন জিগ্নেশ ও তার সঙ্গীরা। যাদের উদ্ধার করেছে তাদের মধ্যে ছিল শিশুরাও।
সেনাবাহিনীতে যেতে ইচ্ছুক যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন জিগ্নেশ লালজিভাই ও সহকারীরা। কাজের বাইরে তাঁরা মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেতু ধসে পড়ার ঠিক পর পর ওই জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলেন জিগ্নেশ ও তাঁর সঙ্গীরা৷ ভিড় দেখে এগিয়ে যান৷ তখনই চোখে পড়ে ধসে পড়া সেতু৷
মাচ্চু নদীর উপরে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়েছে সেতুটি। কিন্তু প্রায় ৬ মাস ধরে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেছিলেন ওরেভা নাম একটি বেসরকারি সংস্থা। তারপর এটি পুরোপুরি ঠিক আছে বলে সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়েছিল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। গুজরাতি নববর্ষের কথা মাথায় রেখে ব্রিজটি খুলে দেওয়া হয় সাধারণের জন্য গত ২৬ অক্টোবর। সরকারি টেন্ডার পেয়ে ব্রিজটি সংস্কারের কাজ করছিল ওরেভা নামক একটি কোম্পানি। কোম্পানিটি দাবি করে আরও ১৫ বছর ধরে কোম্পানিটি ঠিক থাকবে। রবিবার শতাব্দী প্রাচীন ওই ঝুলন্ত সেতুতে ছিল মাত্রাতিরিক্ত ভিড়। এমনকী শনিবারেও বহু মানুষকে ঝুলন্ত ব্রিজে উঠে দাপাদাপি করতে দেখা যায়। তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
রবিবার সারা রাতযাবৎ চলে উদ্ধারকাজ। আজ সকালেও উদ্ধার কাজ অব্যাহত। তবে পর্যাপ্ত আলোর অভাবে উদ্ধারকাজ অনেকাংশে ব্যাহত হয়। এই দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে গুজরাত সরকার। ৪ ফুট চওড়া, ২৫৫ গজ লম্বা এই ঝুলন্ত সেতু ছিল দরবারগড় প্যালেস হোটেল এবং শহরের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী মাধ্যম৷ ১২৫ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্রিজে প্রায় ৫০০ মানুষ কিভাবে উঠল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।