পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : ২৫শে ডিসেম্বর বড়দিনে করোনা সংক্রমণের হাত থেকে দেশবাসীকে দূরে থাকার সতর্কবার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এদিনই করোনা সংক্রমণের খবর পুরনো সেই আতঙ্ককে আবার ফিরিয়ে দিল। চিন থেকে ভারতে আসা এক ব্যক্তির দেহে মিলল করোনার জীবাণু। রবিবার আগ্রার এক ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তির কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে। সম্প্রতি ওই ব্যক্তি চিনে গিয়েছিলেন। এই ঘটনা ফের ভারতে কোভিড-১৯-এর নয়া উপরূপ বিএফ.৭ সংক্রমণের আশঙ্কাকে উসকে দিল।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তি গত ২৩ ডিসেম্বর চিন থেকে ভারতে ফেরেন। ব্যবসায়িক কাজে তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন। ফেরার পরে শারীরিক কিছু উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তিনি বেসরকারি পরীক্ষাগারে টেস্ট করানোর পর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওই গবেষণাগারের পক্ষ থেকে তাঁর কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবর রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগকেও জানানো হয়েছে। এরপরই রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ, তাদের দ্রুত প্রতিক্রিয়া দলকে ওই ব্যক্তির বাড়িতে পাঠায়। তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও কোভিড পরীক্ষা করা হয়। তবে ওই ব্যক্তির নমুনায় পাওয়া করোনাভাইরাস, বিএফ.৭ সাবভ্যারিয়েন্ট কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সম্প্রতি করোনাভাইরাস, বিএফ.৭ সাবভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মেলে গুজরাতের ভাবনগরে। আক্রান্ত ব্যক্তিও চিনে গিয়েছিলেন। গত ১৯ ডিসেম্বর তিনি ভারতে আসেন। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য তাঁর নমুনা গান্ধীনগরে ইনসাকগের একটি গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত, ভারতে বিএফ.৭ সাবভ্যারিয়েন্টের মোট চারটি ঘটনা নিশ্চিত করা গিয়েছে। তিনটি সংক্রমণ ধরা পড়েছে গুজরাতে, আর অপরটি ওড়িশায়। তবে গুজরাতের স্বাস্থ্য বিভাগ আগেই জানিয়েছিল, ওই রোগীরা যথাক্রমে জুলাই, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে বিএফ.৭ এবং বিএফ.১২ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তাঁদের তিনজনই ঘরে নিভৃতাবাসে থেকেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছেন। অন্যদিকে ওড়িশায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক মহিলার নমুনায় বিএফ.৭ সাবভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছিল। পরীক্ষার সময় ওই মহিলার শরীরে কোভিডের কোনও উপসর্গও ছিল না। ওড়িশা সরকার জানায়, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলে, তার আগে কোভিড পরীক্ষা করিয়েছিলেন। অক্টোবর থেকে ওই মহিলা এবং তার পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন। ভারত থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে তাঁদের কারোরই শরীরে কোভিডের কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, শূন্য কোভিড নীতি থেকে সরে আসার পরেই ফের করোনার ঢেউ আছড়ে পড়েছে চিনে। দেশটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫ লক্ষ করে মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। মর্গগুলিতেও উপচে পড়ছে দেহ। চিনের পাশাপাশি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, ফ্রান্স-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।