পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: একবার কংগ্রেস তো পরেরবার বিজেপি। এভাবেই মত বদলানোর রেওয়াজ রয়েছে হিমাচলপ্রদেশে। ২০২২-এও তার ব্যতিক্রম হল না। ৬৮ আসনের বিধানসভায় ইতিমধ্যে ৪০টি আসন পেয়ে ম্যাজিক ফিগার পার করেছে কংগ্রেস। আর রাজনৈতিক মহল এর সিংহভাগ কৃতিত্ব দিচ্ছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধিকে। ঠাকুমা ইন্দিরার উত্তরসূরী হিসেবে দেখা হয় তাকে। বহু মানুষ তার মধ্যে দেখতে পান ইন্দিরা গান্ধির ছায়া। এই নির্বাচনী ফলাফলে নেত্রী হিসেবে প্রিয়াঙ্কার প্রভাব মজবুত হল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আগেরবার লোকসভায় প্রিয়াঙ্কা-ক্যারিশমা কাজ করেনি। তা সত্ত্বেও হাল ছাড়েননি কংগ্রেস নেত্রী। রাহুল ভোটপ্রচারের পুরোটা সময় ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। হিমাচল সামলেছেন প্রিয়াঙ্কাই। বারবার সেখানে গিয়ে মিশেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন তিনি। মহিলাদের মাসে ১৫০০ টাকা ভাতা, ৫০০ টাকায় রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের মতো প্রতিশ্রুতি নজর কেড়েছে ভোটারদের। গত পাঁচ বছরে বিজেপির শাসনামলে রান্নার গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম শুধু বেড়েই চলেছে।
এর মোকাবিলায় হিমাচলের জনতাকে তেমন কিছু দিতে পারেনি জয়রাম ঠাকুরের সরকার। কেদারনাথে গিয়ে মোদি হিমাচলের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেও ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি। কাজ করেছে প্রিয়াঙ্কার ব্যক্তিত্ব আর হিমাচলি রীতির, যার ফলে প্রতিবারই বদলে যায় সরকার। বহুদলীয় গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে জনতার এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা গণতন্ত্রকেই মজবুত করে বলে জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধি হিমাচলে বারবার র্যালি, রোড শো করেছেন। বীরভদ্র সিংয়ের মৃত্যুর পর পাহাড়ে কংগ্রেস কেমন লড়াই করবে, সেটা নিয়েও সংশয় ছিল। রাজীব শুক্লাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। সেই সিদ্ধান্ত কাজে দিয়েছে। পাশাপাশি বীরভoের পুত্র বিক্রমাদিত্য সিংও তার আসন থেকে জিতেছেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও চিন্তা যাচ্ছে না কংগ্রেসের। এ ক্ষেত্রে বিধায়কদের হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় থাকবে বিজেপি। সেটা রুখতে ইতিমধ্যেই বিধায়কদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে কংগ্রেসের উচ্চপদস্থ নেতারা। তাদেরকে রিসর্টে রেখে এর মোকাবিলা করা হতে পারে। যাইহোক, ভারত জোড়ো যাত্রার মাঝে হিমাচলে কংগ্রেসের এই প্রত্যাবর্তন তাদেরকে উজ্জীবিত করবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন বীরভদ্রের আসনে কংগ্রেস কাকে বসায়, সেটাই দেখার। তার স্ত্রী প্রতিভা সিংয়ের নাম নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। মাকে আসন ছেড়ে দিতে রাজি বিক্রমাদিত্য সিং।