পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠে ডিএ আন্দোলনকারীদের নবান্ন অভিযানে অনুমতি বিষয়ক মামলা। রুট পরিবর্তন করে নবান্নে অভিযানে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। ফেরিঘাট থেকে বঙ্কিম সেতু, ডিএম স্লোপ, এম জি রোড, হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মিছিল করবেন সরকারি কর্মচারী সংগঠন। অর্থাৎ যে পথে অভিযান করবেন বলে ভেবেছিলেন সরকারি কর্মচারীরা, সেই পথে নবান্নে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ডিএ দাবিতে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের নবান্ন অভিযানে সায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে যে পথে অভিযান করবেন বলে ভেবেছিলেন সরকারি কর্মচারীরা, সেই পথে নবান্নে যেতে পারবেন না তাঁরা। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার নির্দেশ দিয়েছেন, -‘ মিছিলের যাত্রাপথ বদল করতে হবে’।
আগামী বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কো-অর্ডিনেশন কমিটি-সহ সরকারি কর্মচারীদের কয়েকটি সংগঠন।
এদিন সকালে এই মামলা নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গেল বেঞ্চের কাছে প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। বিচারপতি মান্থার রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ”আন্দোলনকারীরা নিজেদের অসুবিধার কথা জানাতে চাইছে। তা যদি শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়, তবে বাধা দেব কেন? রাজ্য এই ধরনের কর্মসূচিতে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, কিন্তু বাধা দিতে পারে না।” এমনকি, প্রতিবাদ করা মানুষের মৌলিক অধিকার বলেও এদিন এজলাসে মন্তব্য করেন বিচারপতি।
পরবর্তীতে আবার মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে বিচারপতি মান্থার রাজ্যের সরকারি কর্মীদের সংগঠনগুলিকে শর্ত সাপেক্ষে নবান্ন অভিযানের অনুমতি দেন। বিচারপতি বলেন, ”আগামী বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে থেকে সাড়ে ৪টে পর্যন্ত কর্মসূচি করা যাবে। হাওড়ার ফেরিঘাট, বঙ্কিম সেতু, মহাত্মা গান্ধী রোড হয়ে হাওড়া ময়দানে শেষ হবে মিছিল।”
প্রসঙ্গত এই মিছিলে এর আগে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। রাজ্যের তরফে হাইকোর্টে যুক্তি দেওয়া হয় -‘যে পথে মিছিল করার কথা বলা হচ্ছে, সেটা মিছিলের জন্য নির্দিষ্ট করা কোনও পথ না। এটা জনবহুল এলাকা, সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে। স্কুল ও অফিস যাত্রীর অসুবিধা হবে। ট্রাফিকের অসুবিধা হবে। অন্য পথে অন্য জায়গায় করলে অসুবিধা নেই। আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি পথে কর্মসূচি করতে দিতে রাজ্যের কোনও অসুবিধা নেই’।এর পাল্টা যুক্তি দিয়ে বিচারপতি মান্থার প্রশ্ন করেন, ”যে বিধিনিষেধের কথা আপনারা এখানে বলছেন, সেটা রাজ্যের শাসকদলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য তো? রেড রোড বন্ধ করে যখন কর্মসূচি হয়, মিছিল হয় তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না? কিছু দল যখন মিছিল করে তখন গোটা কলকাতা স্তব্ধ হয়ে যায়। আমি শুধু শাসকদলের কথা বলছি না। মানুষ পরিবার নিয়ে রাস্তায় বেরোতে চায়, কিন্তু বেরোতে পারেন না! তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না?” এইবিধ সওয়াল-জবাব চলার পর বিচারপতি শর্তসাপেক্ষে নবান্ন অভিযানে অনুমতি দেন।