দেবশ্রী মজুমদার,রামপুরহাট,প্রেমে মনোমালিন্য, সামান্য একটু কথা কাটাকাটি। আর তার জেরে কয়েকদিনের মধ্যে যুগলের পর পর আত্মহত্যা। ঘটনার জেরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
জানা গেছে, প্রেমিকের সঙ্গে কথা কাটাকাটির পরেই প্রেমিকা আত্মহত্যা করেন। সেই শোকেই কয়েকদিনের মধ্যেই প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলো প্রেমিক।
এলাকা সূত্রে জানা গেছে, নলহাটি থানার নওয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমারসান্ডা গ্রামের বাসিন্দা লিজা ফুলমালির (১৬) সঙ্গে মুরারই থানার পলসা পঞ্চায়েতের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা সমর ফুলমালির (২০) ভালোবাসার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। লিজার মামার বাড়ি ইসলামপুর গ্রামে। সেই সূত্রে যাতায়াত থেকেই তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক।
দুই দিনমুজুর পরিবার, তাদের ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দিতে বিয়েতে রাজি হয়েছিল। তবে বাধ সেধেছিল প্রেমিকার বয়স। দুই পরিবারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল মেয়ের বয়স ১৮ হলেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেবে দুই পরিবার। এরই মধ্যে একদিন মোবাইলে লিজা আর সমরের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপরেই গত ১৯ আগস্ট সকালে বাড়িতেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে লিজা।
সেই শোক সহ্য করতে পারেনি সমর। তাই বুধবার দুপুরে লিজার বাড়ির সামনে গিয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্বহত্যার চেষ্টা করে সে। লিজার পরিবারের লোকজন তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে লোহাপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং পরে সেখান থেকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বুধবার রাতে মৃত্যু হয় সমর ফুলমালির।
লিজার বাবা গৌতম ফুলমালি বলেন, “দুজনের মধ্যে সম্পর্ক আমরা মেনে নিয়েছিলাম। কিছু দিন আগে মোবাইলে ওদের মধ্যে ঝগড়া হয়। গত ১৯ তারিখ আমরা দিনমজুরির কাজে বেরিয়ে যাই। বাড়িতে ছিল দুই ছেলেমেয়ে। তাদের কাছ থেকে লিজার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার খবর পাই। বুধবার ছেলেটা আবার বিষ খেয়ে আমাদের বাড়ি চলে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্তু বাঁচানো গেল না।”
সমরের আত্মীয় রাজু ফুলমালি বলেন, “যে দিন লিজা আত্মহত্যা করে সেদিন সমর মুর্শিদাবাদের বারালা গ্রামে মামার বাড়িতে ছিল। লিজার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরাও বারালা গ্রামে চলে যাই। সেদিন থেকে সমরকে চোখে চোখে রেখেছিলাম। বুধবার সকালে সমর বাড়ি ফেরার নাম করে মামার বাড়ি থেকে বেরিয়ে লিজার বাড়ির কাছে গিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
যুগলের গভীর প্রেমের সম্পর্কের এমন করুণ পরিণতি হতে পারে এমনটা ভাবতে পারে নি পাড়া প্রতিবেশী থেকে দুই পরিবার।