পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্র দেশজুড়ে যে অভিন্ন দেওয়ানিবিধি লাগু করার কথা বলছে তার বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা। নাগাল্যান্ডের ক্যাথলিকদের সংগঠন ‘দ্য ক্যাথলিক অ্যাসোসিয়েশন অব নাগাল্যান্ড’ (সিএএন)-এর তরফে ইউসিসি (ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা অভিন্ন দেওয়ানিবিধি)-র বিরোধিতা করে বলা হয়েছে,ভারতের শক্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠিত তার বৈচিত্রের উপর, বলপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া অভিন্নতার উপর নয়।
ক্যাথলিকদের একটি সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কোহিমা ডায়োসিসের বিশপ রেভ জেমস থপপিল বলেন, ইউসিসি উপজাতিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ধর্মীয় দিকগুলির পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও হস্তক্ষেপ করে। সরকারের উচিত মানবাধিকারের নৈতিক অনুশীলনকে সম্মান করা। ভারতের যে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র রয়েছে তাকে অবশ্যই উন্নত ও উৎসাহিত করতে হবে, যাতে এই অভিন্নতার যাঁতাকলে পড়ে মানুষ রোবট না হয়ে যায়। বৈচিত্রই জাতির শক্তি ও ঐক্যকে সংজ্ঞায়িত করে। ধর্ম ও ভাষার বৈচিত্রই দেশের শক্তি। এটিকে উন্নত ও মজবুত করতে হবে।
ইউসিসি উস্যুতে নাগাল্যান্ডের ক্যাথলিক চার্চগুলির অবস্থান প্রসঙ্গে সিএএন সভাপতি জনি রুয়াংমেই জানান, একটিমাত্র আইনের মাধ্যমে আমাদের সবাইকে শাসন করা যাবে না কারণ, বিভিন্ন উপজাতি ও ধর্মের মানুষ সারা দেশে একসাথে বসবাস করে। শুধু তাই নয়, ইউসিসিকে তিনি ‘এলিয়েন’ বা ‘ভিনগ্রহের জীব’ বলেও কটাক্ষ করেন। দেশের ঐক্য আরও মজবুত করতে এই বৈচিত্রকে উৎসাহিত করতে হবে। তাঁর কথায়, সিএএন বিশ্বাস করে যে, ‘ইউনাইটেড’ (ঐক্যবদ্ধ) ও ‘ইউনিফর্ম’ (অভিন্ন) এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। দেশের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য থাকা উচিত। কিন্তু, সেই ঐক্যকে নষ্ট করার জন্য অভিন্নতাকে আনা উচিত নয়।
এদিনের সেমিনারে ইউসিসি ছাড়াও ক্যাথলিক চার্চগুলি ও রাজ্য সরকারের নীতিগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নাগাল্যান্ডের আদিবাসী বাসিন্দাদের নথিভুক্তিকরণ, নাগা রাজনৈতিক সমস্যা ও ৩৭১ (এ) নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও জানান, তাঁদের এই সেমিনারের বক্তব্য শীঘ্রই সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে আরও বিবেচনার জন্য।
সিএএন-এর উপদেষ্টা ইলিয়াস টি লোথা জানান, সেমিনারে মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আরও তৎপরতার উপর জোর দিয়েছে। উল্লেখ্য, রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, শুধুমাত্র মুসলিমদের নিশানা করে মেরুকরণের হাওয়াকে আরও শক্তিশালী করতে ইউসিসি আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে শুধু মুসলিমরা নয়, খ্রিস্টান থেকে আদিবাসী সহ অনেকেই এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে।