পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন, নৃশংসতা ও গণহত্যা চালাচ্ছে সরকার। উইঘুরদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আর এই অপকর্মকে ধামাচাপা দিতে ‘ট্যুইটার বাহিনী’ বা ‘ট্রল আর্মি’ গঠন করা হয়েছে যারা চিন সরকারের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। উইঘুর সম্প্রদায়ের পক্ষে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বললে তাদের ‘ট্রল’ করাই এই বাহিনীর কাজ। সম্প্রতি চালানো এক গবেষণায় বলা হয়েছে, চিনে সোশ্যাল সাইটে যারা উইঘুর মুসলিমদের পক্ষে কথা বলছেন বা যেসকল উইঘুর ট্যুইটারে সরকারের নির্যাতনমূলক নীতি ফাঁস করার চেষ্টা করছেন তাদেরই টুঁটি চেপে ধরছে চিনের ট্যুইটার আর্মি। এরই পাশাপাশি এই ট্যুইটার আর্মির কাজ হল, শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুরদের বন্দিদশা ও নির্যাতনের খবর ধামাচাপা দিয়ে সেই প্রদেশকে শান্তি ও অগ্রগতির আশ্রয়স্থল হিসেবে প্রচার করা। চিনা সরকারের পক্ষে ইতিবাচক সংবাদ প্রচার করার পাশাপাশি সোশ্যাল সাইটে উইঘুরদের পক্ষে কথা বলা ব্যক্তিদের ট্রল করার কাজে ব্যস্ত থাকে এই আর্মি। এই ট্যুইটার আর্মির লক্ষ্য হল যারা চিনা সরকার দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে বা হয়েছে তাদের প্রতি মানুষের সমর্থন হ্রাস করা। চিন সরকার দ্বারা নির্যাতিত মানুষদের ওপর যাতে অন্যরা সহানুভূতি না দেখাতে পারে সেদিকে নজর রাখে হাজার হাজার ট্রলার। অবশ্য চিন যে হারে উইঘুরদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে বা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তা কারোরই অজানা নয়। ২০১৮ সালের আগস্টে মাসে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিটির কাছে উইঘুর বিষয়ক একটি প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, উইঘুর মুসলিমদের শিনজিয়াং অঞ্চল একটি বিস্তৃত বন্দি কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। এ অঞ্চলে প্রায় ১০ লক্ষ উইঘুরকে কারাগারে বন্দি করে রেখে নির্যাতন চালাচ্ছে চিন। জেলে বন্দি নিরীহ উইঘুরদের জোর করে ধর্মান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি গর্ভবতী উইঘুর নারীদের পেট কেটে বাচ্চা বের করে হত্যা করছে চিনের আধিকারিকরা। রমযান মাসে উইঘুরদের রোযা ও নামায নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি তাদের দাড়ি রাখাও নিষিদ্ধ করেছে শি জিনপিং সরকার। সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর জিনপিং সরকারের এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি করেন। তাদের মোকাবিলা করতেই কাজ করছে চিন সরকারের নির্দেশে গঠিত এই ‘ট্রল আর্মি’।