পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ বিজ্ঞাপনেই বাজিমাত করেছে বিজেপি সরকার। এক কোটি- দুই কোটি নয় নগদ ৪০১.০৪ কোটি টাকা বিজেপি সরকার খরচ করেছিল শুধুমাত্র ২০১৪-২০২২ সালে বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পের বিজ্ঞাপনের খাতে। এমন বিগ বাজেট প্রকল্প দেশ জুড়ে শুরু করলেও তা যে কোনো কাজে আসেনি তা আবারও প্রমাণ করল বিজেপি শাসিত কর্ণাটকের বাল্যবিবাহের হিসেব। বাল্যবিবাহ রোধ, শিশু কন্যাদের শিক্ষা ও কন্যা ভ্রুণ হত্যা রোধ এটাই বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। অথচ এতকিছুর পরেও বিজেপি শাসিত কর্ণাটকে বাড়ছে বাল্যবিবাহ। সেখানে মেয়েদের বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না কোনো আইন কানুন।
যত দিন যায় তত প্রগতি হয়, এটাই স্বাভাবিক হিসেব। কিন্তু কার্ণাটক দেখাচ্ছে অন্য হিসেব। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১-২০২২ সালে সেখানে ৪১৮ টি বাল্যবিবাহ হয়েছে। যা আসলে ২০১৭-২০১৮ সালের তুলনায় ৩০০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে কার্ণাটকের বিধান পরিষদে এমএলসি মুনিরাজু গৌড়ার একটি প্রশ্নের জবাবে সেখানকার মহিলা ও শিশু উন্নয়ন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ৫ বছরে সেখানে ১,০৬৫ টি বাল্যবিবাহ হয়েছে এবং ১০,৩৫২ টি বাল্যবিবাহের অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে।
২০২২ সালে দাঁড়িয়ে এই পরিসংখ্যান খুবই উদ্বেগজনক। তাছাড়া বিজেপির মতে, কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যগুলিতে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলে সেখানে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিতে পারবে বিজেপি। সেই হিসেবে এই জোয়ারের প্রভাব আছাড় খেয়ে পড়া উচিৎ ছিল কর্ণাটকে। কারণ বিগত তিন বছর ধরে কর্ণাটকে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। কর্ণাটকে বাল্যবিবাহের এই পরিসংখ্যান প্রধানমন্ত্রীর বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পকে কালিমালিপ্ত করেছে বলে মনে করছে ওয়াকিফহাল মহল।
উল্লেখ্য, ১৯২৯-র সারদা অ্যাক্ট অনুযায়ী মেয়েদের বিয়ের নূন্যতম বয়স নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল ১৪ বছর। ২০০৬ এর আইনে মেয়েদের বিয়ের নূন্যতম বয়স বাড়িয়ে ১৮ করা হয়। এরপর ২০২০-র ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মেয়েদের বিয়ের বয়সের সীমা বাড়িয়ে ২১ করার প্রস্তাব দেন। অথচ তাঁর দল, বিজেপি শাসিত কর্ণাটকে প্রশাসনের নাকের ডগায় বাল্যবিবাহের শিকড় ক্রমশ মজবুত হচ্ছে।