পারিজাত মোল্লা: বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এর এজলাসে উঠে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা মামলা।এদিন।জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা মামলায় তদন্ত প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারী করলো কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিল সিঙ্গেল বেঞ্চ। সেই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না।এর আগের দিন শুনানির সময় বিজেপির আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন,-‘ বিধানসভায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আগে কোনও ঘোষণা হয়নি। কোনও নোটিশও দেওয়া হয়নি। হঠাত্ করে বিধানসভায় কেউ জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে উঠলে অবমাননার অভিযোগ আনা যায় কি? ‘
এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে সওয়াল-জবাব পর্বে ওই আইনজীবী জানান, -”ওই দিন তৃণমূল বিধায়করা শ্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘গলি গলি মে সোর হ্যায়, নরেন্দ্র মোদী চোর হ্যায়’।” এরই মাঝে হঠাত্ করে জাতীয় সঙ্গীত শুরু করে দেওয়া হয়। এভাবে কি দেশকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা যায়? প্রশ্ন তুলেন বিজেপির আইনজীবী । একথা শোনার পর বিচারপতি জানান , -‘ জাতীয় সঙ্গীতকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। রাজ্যের অভিযোগ মিথ্যা নয়। কিন্তু, এর জন্য কোনও এফআইআর করা যায় না’।এর আগের শুনানি পর্বে এই মামলায় ধমক দিয়ে বিচারপতি বলেছিলেন, ”ধর্ষণের অভিযোগ থাকলে তার তদন্ত সঠিক ভাবে করে না পুলিশ এমন উদাহরণ অনেক আছে। সেখানে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা নিয়ে এত দ্রুত মামলা দায়ের করা হয় গেল? এই ধরনের ছেলেমানুষি মামলার জন্য একাধিক মামলা আটকে রয়েছে।’গত ২৯ নভেম্বর ধর্মতলায় ছিল অমিয় অমিত শাহের সভা।
ওই দিন বিধানসভায় আম্মেদকর মূর্তির পাদদেশে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে ধরনায় বসেন তৃণমূলের বিধায়করা। সেই ধরনায় ‘মোদী ও শাহ চোর’ স্লোগান ওঠে। সেকথা জানতে পেরেই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সেখানে পৌঁছন বিজেপি বিধায়াকরা। তাঁরা পালটা চোর স্লোগান দিতে শুরু করেন। এদিন শ্লোগান শেষে জাতীয় সংগীত গাইতে শুরু করে দেন তৃণমূল বিধায়করা। সেই সময়ও চলছিল বিজেপি’র স্লোগান। এর পরই স্পিকারের কাছে বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূল।
যদিও রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত এদিন এজলাসে বলেন, –‘ কর্মসূচি শেষে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সে কথা জানা সত্ত্বেও, বিজেপি বিধায়করা জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছেন। এই অভিযোগ দায়ের হতেই পারে’।দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি বলেন, -‘সেদিন ঠিক কি ঘটনা ঘটেছিল? তা জানার জন্য তদন্ত জরুরি। রাজ্য আগে আদালতে হলফনামা দিয়ে পুরো বিষয়টা জানাক, তারপর মামলা শুনবো’। আগামী ১০ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।