পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বিষমদ কাণ্ডে পূর্ব বর্ধমানে মৃত বেড়ে চার। নতুন করে আরও দুই জনের মৃত্যু পরিস্থিতি চাঞ্চল্যকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট জনে। গত বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় এক হোটেল থেকে মদ খাওয়ার পর থেকেই সামনে আসছে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা। চিকিৎসকদের কথায়, সকলের শরীরেই বিষক্রিয়ার প্রমাণ মিলেছে।
রবিবার সকালে এই বিষমদ কাণ্ডে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। জানা গেছে মীর মেহবুব ও বাপন শেখ নামে দুই যুবকও বর্ধমানের কলেজমোড় এলাকার তারামা হোটেল থেকে মদ খেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে ওই দোকান থেকে মদ খাওয়ার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। পরিবারের কথায়, ক্রমাগত বমি ও পেটে যন্ত্রণা শুরু হয় সেদিন রাত থেকেই।
অসুস্থতা বাড়ার কারণে দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দু’দিন ধরে ওখানেই চিকিৎসা চলছিল। তবে এদিন সকালে চিকিৎসারত অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তাঁদের। জানা গেছে, বর্ধমানের খাগড়াগড় পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা শেখ বাপ্পা ওরফে মীর মেহবুব ও বাপন শেখ।
এই ঘটনায় পুলিশ ও আবগারি দফতরকে কাঠগড়ায় তুলছে খাগড়াগরের বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, সঠিক নজদারি থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না। মৃতের পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্যর দাবি তুলছেন এলাকার বাসিন্দারা।
অন্যদিকে, যে হোটেলের মদ থেকে কাণ্ড ঘটেছে সেই দোকানের মদ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। সেই রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, কারখানায় তৈরি মদের কোন ভেজাল ছিল না। সমস্ত উপকরণ সঠিক পরিমাণে মিশিয়েই বাংলা মদ তৈরি করা হয়েছিল পানাগড়ের কারখানায়। এমনই রিপোর্ট এসেছে জেলা প্রশাসনের হাতে। হোটেল থেকে উদ্ধার হওয়া মদের বোতলের নমুনা কলকাতায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। আবগারি দফতরের ল্যাবরেটরিতে তা পরীক্ষা হয়। সেখান থেকেই জানানো হয়েছে মদে ভেজাল ছিল না। এতেই বাড়ছে আরও রহস্য। ভেজাল নাহলে কীভাবে হোটেলে মদ বিষাক্ত হল? সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাহলে কি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মদের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে দিয়েছিল? তদন্ত করছে পুলিশ।
এদিকে, এই ঘটনার তদন্তে নেমে ওই তারা মা হোটেলের মালিকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। যদিও সেই হোটেলের মালিক গনেশ পাসওয়ান অসুস্থ থাকায় এখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।