নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: দেশের কৃষকদের আন্দোলনের কাছে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাধ্য হয়ে তাদের তৈরি কেন্দ্রীয় কালা কৃষি আইন শুক্রবার বাতিল করার কথা করলেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রের ওই কৃষি আইন বাতিল প্রসঙ্গে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের শ্রম, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। এদিন তিনি মাঠ থেকে নিজের জমির ধান তুলে ঝাড়াই মাড়াই করছিলেন।
সেই সময় বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তুলোধোনা করে মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, কৃষি আইন প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে আন্দোলনরত কৃষকদের নৈতিক জয় হল।পাশাপাশি অহংকারের পতন হল। তিনি আরো বলেন ২০০৬ সালে কৃষক আন্দোলন দেখেছিলাম। এইরকম অহংকার দেখা গিয়েছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের কৃষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বামফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অহংকারের পতন হয়েছিল। বেচারাম মান্না নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে আরও বলেন, সারা ভারতবর্ষব্যাপী বিজেপির নেতৃত্বাধীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অহংকারের পতন হল। কৃষকদের নৈতিক জয় হল।
মাথা নত করে সারা ভারতবর্ষে কৃষকদের কাছে স্বীকার করতে হল পার্লামেন্টে কৃষি আইন সংক্রান্ত বিল তারা প্রত্যাহার করবে। পার্লামেন্টে যতক্ষণ না বিল প্রত্যাহার করছে ততক্ষণ এদের বিশ্বাস করিনা। ভারতবর্ষের মানুষের বিশ্বাস করে না। আমরাও করি না। বিশেষ করে কৃষকের ফসলের মার্কেট প্রাইসের ব্যাপারটা। পুঁজিপতিদের হাতে কৃষকের ফসলের মূল্য নির্ধারণ হবে।এই বিষয়টার উপর বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার কি করছে সেটা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
যতক্ষণ না পার্লামেন্টে বিল প্রত্যাহার করছে ততক্ষণ আমরা কৃষকদের নিয়ে এভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাব। সিঙ্গুরের কৃষিজমি আন্দোলনের জয় দেরিতে হলেও হয়েছিল। আগে তো আমরা বলেছিলাম, ধর্মের ঢেঁকি ধীরে ধীরে বয়। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন দীর্ঘদিন চলল। আমাদের জয় হয়েছে। কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে যে কৃষকদের আন্দোলন চলছিল তার জয় হয়েছে। তবে চার পাঁচটা রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন আছে। সেই বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা গিমিকও হতে পারে বলে বেচারাম মান্নার অভিযোগ। তারা বুঝে গেছে কৃষকরা আমাদের পাশে নেই। গ্রামের মানুষরাও আমাদের পাশে নেই। হয়তো তারা কৌশল অবলম্বন করতে পারে। যতক্ষণ না পার্লামেন্টে কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে ততক্ষণ ওদের কোন বিশ্বাস করা যায় না। তাই আমাদের আন্দোলন চলবে।