পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: নৃশংস খুনি ও ধর্ষকদের জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার নতুন সাফাই শোনালেন গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক। অপরাধীরা ‘ব্রাহ্মণ’। তাই তাদেরকে মুক্তি! এতদিন ধর্ষক ও খুনিদের যাবজ্জীবন সাজা কিংবা ফাঁসির আদেশ শোনা যেত। তবে হালফিলের ‘গুজরাত মডেল’ বিলকিস বানু মামলায় দেখিয়েছে অন্য এক ছবি।
২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার সময় বিলকিস বানুকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করা হয়। তার পরিবারের ৯ জন সদস্যকে হত্যা করে দাঙ্গাবাজরা। এহেন ১১ জঘন্য অপরাধীকে জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছে গুজরাতের বিজেপি সরকার। এমন কাণ্ডে স্বভাবতই বিস্মিত হয়েছেন বহু মানুষ। দেশে আইনের শাসন আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তবে গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক কে রাউলজি এ নিয়ে বিব্রত নন।
তিনি অপরাধীদের পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন। রাউলজির বক্তব্য, অপরাধীরা ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তাদের সংস্কার খুব ভালো। জেলে তাদের ব্যবহারও নাকি খুব ভালো ছিল বলে তিনি দাবি করেছেন। তাই এমন নৃশংস অপরাধ করেও তারা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই বলছেন, অপরাধীরা ব্রাহ্মণ। সংঘ-বিজেপি ঘনিষ্ঠ। তাদেরকে আর সরকার কতদিন আটকে রাখবে?
বিজেপি সরকারের যে প্যানেল গুজরাত দাঙ্গার ১১ অপরাধীকে মুক্তি দিয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে বিজেপির ২ বিধায়ক। এমনটাই দাবি করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম। সিকে রাউলজি ও সুমন চৌহান হচ্ছেন বিজেপির সেই দু’জন বিধায়ক।
এ ছাড়াও প্যানেলে ছিলেন মুরলী সাহেব। যিনি আবার গোধরার ঘটনার অন্যতম সাক্ষী। এই তিনজনের কথা টুইটারে তুলে ধরে পি চিদম্বরম অভিযোগ তুলেছেন, যে প্যানেল গুজরাত দাঙ্গার এই নৃশংস অপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছে, সেই প্যানেল কি নিরপেক্ষ ছিল? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা দিবসের দিন দেশের নারীশক্তি ও তাদের সম্মান প্রদর্শন নিয়ে লালকেল্লায় ভাষণ দিয়েছিলেন। ঠিক সেইদিনই গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত ১১ অপরাধীকে ছেড়ে দিয়েছে গুজরাত সরকার। এ নিয়ে মোদিকে একহাত নিয়েছেন পি চিদম্বরম। সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস নেতা মোদিকে কটাক্ষ করে লেখেন, গণধর্ষণে দণ্ডিত ১১ ব্যক্তিকে রেহাই করে দিয়ে গুজরাতে নারীশক্তি ও বিনাশ শক্তির লড়াইয়ে বিনাশ শক্তি জিতেছে। বিলকিস বানু কেসে এই ১১ জন ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে গুজরাত সরকারের বিশেষ প্যানেল। সেই প্যানেলের সদস্য কারণ দর্শিয়ে বলছেন, ওরা ‘সংস্কারি’ ব্রাহ্মণ। ওদেরকে তো ছাড়তে হবেই!