দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুর: হেলমেট পরে বাইক না চালালে ট্রাফিক পুলিশ বড় জোর ফাইন করতে পারেন। সমাজতো পাল্টাতে পারবেন না, যতক্ষণ না মানুষ নিজেকে বদলাবেন। তাই শুধু পুলিশ নয়, নিজেদের এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে একদিন পুলিশের দরকার পড়বে না। পথ নিরাপত্তা রক্ষা করা নাগরিকের নিজস্ব পালনীয় কর্তব্য। এবার সেই ফাইনের পথেই এগোলো জেলার বাইকার্স অ্যাসোসিয়েশন। হেলমটহীন নিজ সদস্যদের জরিমানার অর্থে অনাথ শিশুদের বিরিয়ানি খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে এ্যাসোসিয়েশন। পুরো নাম বাইকার অ্যাসোসিয়েশন- ডেভিল ক্রাশার বাইকার্স অ্যাসোসিয়েশন।
শুধু রোমিও বাইক চালানো নয়। সমাজের বিভিন্ন কাজে নিজেদের জড়িয়ে রাখার উদ্দেশ্যে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাইক চালকরা গড়ে তোলেন এই বাইকার্স অ্যাসোসিয়েশন। বোলপুর, শান্তিনিকেতন, ইলামবাজার, সাঁইথিয়া, মহম্মদবাজার, সিউড়ি, রাজনগর, দুবরাজপুর, রামপুরহাট, সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাইক চালকেরা এই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য।
বাইক চালালে হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক, এটা এই সংগঠনের বেশ কড়া আইন। নিয়ম ভাঙলেই সদস্যদের গুণতে হবে জরিমানা। হেলমেট না পরে ধরা পড়লে দলের সাধারণ সদস্যদের ১০০ টাকা, পরিচালন সমিতির সদস্যদের ২৫০ টাকা ও সংস্থার নেতৃস্থানীয়রা হেলমেট ছাড়া ধরা পড়লে গুণতে হবে ৫০০ টাকা। এভাবেই নিয়মই কড়া ভাবে পালন করা হয়। যারা নিয়ম ভেঙেছেন তাদের রাস্তায় ধরে, সঙ্গে সঙ্গে ছবি তুলে নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দিয়েই আদায় করা হয় জরিমানার টাকা। এভাবেই জরিমানার প্রায় সাত হাজার টাকা জমিয়ে তা বোলপুরের রায়পুর- সুপুর পঞ্চায়েতের মির্জাপুর বিবেকানন্দ আশ্রমের ৬০ জন অনাথ শিশুকে বিরিয়ানি খাওয়ালো এই বাইকারস্ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। আর তাতেই আনন্দ আর ধরে না ওই সমস্ত অনাথ শিশুদের।
সংস্থার পক্ষে অরিজিৎ মাল বলেন, “আমাদের সংগঠনের সদস্য হতে বাইক চালানোর জন্য হেলমেট অপরিহার্য। হেলমেট বিহীনভাবে বাইক চালানোর ফলে রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তাই সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য আমাদের এই উদ্যোগ। যারা নিয়ম ভেঙেছেন তাদের কাছে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পাশাপাশি করা হয়েছে সতর্কও। এক মাসে জমানো টাকায় অনাথ শিশুদের বিরিয়ানি খাইয়ে খুব আনন্দ পেয়েছি আমরা। খুশি হয়েছে কচিকাঁচারাও।”