পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: চিনে করোনা সংক্রমণ বাড়তেই উদ্বেগ বেড়েছিল ভারতের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বর্ষবরণে আনন্দের পাশাপাশি দেশবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই অবস্থায় হাসপাতালগুলিতে পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে দিল্লির পাশাপাশি বহু রাজ্যে শুরু হয় মক ড্রিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য নিজে সফদরজং হাসপাতালে উপস্থিত থেকে মক ড্রিল পর্যালোচনা করেন।
করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ নিয়ে অযথা ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে রাজ্যবাসীকে আগেই আশ্বস্ত করেছিলেন চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, চিনে শূন্য কোভিড নীতি নেওয়া হয়েছিল। বেশিরভাগ মানুষই ছিল গৃহবন্দী। ফলে হঠাৎ করে লকডাউন তুলে দেওয়ার জন্য এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে ভারতে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে। ফলে চিনের মতো অবস্থা ভারতে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এছাড়াও চিনে যেখানে ৫০ শতাংশ ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ হয়েছে, সেখানে ভারতে ভ্যাকসিনের সাফল্যের হার খুব ভালো। এবার ফের একবার আশ্বস্ত করলেন চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার।
চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার জানালেন, বিএফ.৭ যে অতি দুর্বল স্ট্রেন, এই নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। করোনাকাল এখন শেষের দিকে তাও স্পষ্ট। তাই এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে সতর্ক থাকতে হবে। চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারের কথায়, ডিসেম্বরের শুরুর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছিল, সম্ভবত ২০২৩-এর গোড়ার দিকে এই অতিমারি শেষ হতে চলেছে। তাদের এই কথার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে। সম্ভবত বিএফ.৭-এর উপর যে জেনোমিক সার্ভিল্যান্স ও ক্লিনিক্যাল সার্ভিল্যান্স চলছে, সেটি এইদিককেই নির্দেশই করছে। অর্থাৎ যারা এই সাব ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের কেউ বড় শারীরিক রোগের শিকার হননি, তাঁরা বাকি লোকেদের ছড়াতে পারেনি। এর থেকেই স্পষ্ট বিএফ.৭ আগের ওমিক্রনের তুলনায় অনেক দুর্বল।
পাশাপাশি চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, চারজনের কেস স্টাডি করে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর কোনও মানে নেই। তাই প্রাথমিকভাবে ধরে নেওয়া হতে পারে এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট সময়ের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার শক্তি হারায়। ভ্যারিয়েন্ট, সাব ভ্যারিয়েন্টগুলি ক্রমাগত দুর্বল হতে থাকে। বিএফ.৭ তাই ডেল্টা বা ওমিক্রনের তুলনায় ‘একেবারেই অতি রুগ্ন’ একটা স্ট্রেন, বা দুর্বল স্ট্রেন সেটি স্পষ্ট।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে রাজ্যে চারজনের শরীরে ওমিক্রনের নয়া উপরূপ বিএফ.৭ ধরা পড়ে। করোনা আক্রান্ত চারজনের মধ্যে তিনজন নদিয়ার বাসিন্দা এবং একই পরিবারের। চতুর্থজনের বাড়ি কলকাতায়। তাঁরা আমেরিকা থেকে এসেছিলেন। চারজনের শরীরে ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়লেও স্বস্তি দিয়েছিল অন্য একটি দিক। বিএফ.৭-এ আক্রান্ত এ রাজ্যের চার বাসিন্দার সংস্পর্শে এসেছিলেন ৫৫ জন। কিন্তু তাঁরা সকলেই কোভিড নেগেটিভ বলেই স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়। তবে সতর্কতার কোনও বিকল্প নেই, সেই পথে হেঁটে কেন্দ্রের নির্দেশমতো রাজ্যগুলিতে সুষ্ঠু স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া সহ চিন সহ ৬টি দেশ থেকে ভারতে আগত বিমানযাত্রীদের একটি বিশেষ পোর্টালে ৭২ ঘণ্টা আগে করা নেগেটিভ রিপোর্ট আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।