পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ইউক্রন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ এখনও জারি। ইউক্রেন জুড়ে লড়াই চলছে। রুশ সেনারা প্রতিরোধের মুখে পড়ছেন। আগামী ২৪ ঘণ্টাকে ইউক্রেনের জন্য ’অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ সময় বলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এদিকে হামলার মধ্যেই সোমবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ণায়ক আলোচনায় বসার কথা রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের। আলোচনাস্থল বেলারুশ ও ইউক্রেন সীমানার প্রিপিয়াত নদীর ধার। এই আলোচনা সফল হবে কি না, এখন সেদিকেই নজর বিশ্বের। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর ফোনালাপের পর এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দাবি কিয়েভের।
এই মুহূর্তে ঠিক দুই ভাগে বিভক্ত বিশ্ব। একটি পক্ষ রাশিয়ার ও অপরটি আমেরিকাসহ পশ্চিমাদের সমর্থন করছে। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শতশত নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলপ্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলি। এর ফলে ক্ষুব্ধ হয়েছে রাশিয়া। আগের দিনই সেনাকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি রাখার কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। বাইডেনও বলে রেখেছেন ৩য় বিশ্বযুদ্ধ লাগতে পারে এবার। জানা গিয়েছে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ রাশিয়ার জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের পাশাপাশি রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ব্যবস্থা সুইফট থেকেও রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাঙ্ককে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপ ও আমেরিকা। এদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে অস্ত্র গোলাবারুদ পাঠানো শুরু করেছে ইইউ। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়া পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছে। আমেরিকা রাশিয়ার হুমকির সমালোচনায় বলেছে এটা অগ্রহণযোগ্য’। আর ন্যাটোর প্রধান স্টলটেনবার্গ একে ’বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্য বলে উল্লেখ করেছেন।
এখন কূটনৈতিক সমাধানই যুদ্ধ থামানোর একমাত্র আশা। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চুক্তি হওয়াটা অত্যন্ত কঠিন হবে। কারণ যুদ্ধ জারি রয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়া দুইপক্ষই আপোস করতে নারাজ। রাশিয়ার চাপেও মাথা নত করছে না ইউক্রেন। নিজেদের ভূখণ্ডের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা। তবে যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হল জেলেনস্কি সরকার। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী জানান ’আমরা রাশিয়ার সাথে আলোচনায় বসছি, এর বেশি কিছু নয়। আত্মসমর্পণের প্রশ্নই ওঠে না। আমরা তাদের সামনে মাথা নত করব না।’
আরও বলেন পূর্বশর্ত ছাড়া আলোচনার জন্য প্রস্তুত হওয়ার অর্থই ইউক্রেনের বিজয়। আলোচনার সময় কিয়েভ রাশিয়ার কথা শুনবে এবং রুশ সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করবে। এ সময় তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্রগুলো ইউক্রেনকে থামাতে পারবে না এবং মস্কো পারমাণবিক হামলা চালিয়েও কিয়েভকে হারাতে পারবে না।
ইউক্রেন সাহসিকতা দেখালেও বাস্তব চিত্র কিন্তু পুরোপুরি ভিন্ন। এখন কিয়েভের অত্যন্ত কাছে চলে এসেছে রুশ সেনার ৩ মাইল লম্বা বহর। সেই ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার চাপেই হয়তো আলোচনায় বাধ্য হয়েছে কিয়েভ। আলোচনায় না বসলে রুশ সেনা কয়েকদিনের মধ্যেই রাজধানী দখল করে নেবে। তখন জেলেনস্কি সরকারের কাছে আর কিছুই বেঁচে থাকবে না।