পুবের কলম প্রতিবেদক: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খলিস্তানি-মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে শুরু হওয়া অবস্থান-বিক্ষোভ বুধবারও অব্যাহত রয়েছে ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনে। গতকালের তুলনায় আজ শিখ বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে বিজেপির রাজ্য সদর দপ্তরের বাইরে। পাশাপাশি সেন্ট্রাল এভিনিউ-এর ওপরে তাঁবু খাটিয়ে বসে আছেন প্রতিবাদকারীরা। এদিন প্রায় ১২ জন শিখ বিজেপি সদর দপ্তরের আসেন এবং অফিস সেক্রেটারির সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে একটি চিঠি দিতে যান। যদিও তাঁদের সেই চিঠি গ্রহণ করা হয়নি বলে জানান তাঁরা। এরপরেই শুরু হয় মিছিল যা গুরুদুয়ারা থেকে বিজেপির রাজ্য দপ্তরের অভিমুখ নেয়।
রাজ্য বিজেপির দফতরের বাইরে বিক্ষোভ দেখান শিখ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। তাঁদের দাবি, যে পুলিশ আধিকারিকের উদ্দেশে ‘খলিস্তানি’ মন্তব্য করা হয়েছে, সেই জসপ্রীত সিংয়ের কাছে তো বটেই গোটা শিখ সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। বিজেপি দফতর ঘেরাও কর্মসূচি থেকে উঠেছে ‘বিজেপি মুর্দাবাদ’ স্লোগানও। বিজেপি শিখবিরোধী, এই অভিযোগ তুলে মুনিলাল শিখ সঙ্গত গুরুদ্বার থেকে মুরলীধর সেন লেন পর্যন্ত একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়।
বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র অমিত মালব্য তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেছেন মুরলীধর সেন লেনের বাইরে শিখ সম্প্রদায়ের যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের নেতৃত্বে রয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি। শুধু তাই নয়, অমিত মালব্যের অভিযোগ, তৃণমূল সন্দেশখালির বিষয় থেকে নজর ঘোরাতেই এই বিতর্ক তৈরি করেছে। এই একই অভিযোগের সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শুভেন্দু অধিকারীর কন্ঠেও। এমনকি রাজ্য পুলিশের এডিজি সুপ্রতিম সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘আমি সুপ্রতিম সরকারকে চব্বিশ ঘণ্টা সময় দিলাম। যদি ওই সময়ের মধ্যে ধামাখালিতে পুলিশ অফিসারকে আমি ‘খালিস্তানি’ বলেছি তা প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে আমি রাজ্য পুলিশের এডিজি সুপ্রতিম সরকারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে, শিখদের তরফে পাল্টা শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেফতারির দাবিও জানানো হয়েছে। বুধবারই একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তৃণমূলের কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, ওই অডিও ক্লিপ জনৈক পুলিশ আধিকারিক জসপ্রীত সিংয়ের। একটি সংবাদমাধ্যমের তরফে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল। সেই কথোপকথনেই জসপ্রীত দাবি করেছেন, শুভেন্দুই তাঁকে খলিস্তানি বলেছেন। এরপরেই আরও পারদ চড়েছে খলিস্তানি-মন্তব্য ঘিরে শুরু হওয়া বিতর্কের। শুভেন্দুর গ্রেফাতারির দাবি জানিয়ে বিজেপির রাজ্য সদর দপ্তরের বাইরে ‘শিখরা ভারতীয়, খলিস্তানি নয়’ লেখা ব্যানার খাটিয়ে ধর্নায় বসেছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা।