পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ধর্ষণের পর নির্যাতিতা মহিলাকে প্রাণে না মেরে ছেড়ে দিয়েছে ধর্ষক। তাই ‘মানবিক’ ধর্ষকের সাজার মেয়াদ কমিয়ে দিল হাইকোর্ট। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ভাষায়, সে (ধর্ষক) ‘যথেষ্ট দয়ালু ছিল, মেয়েটিকে জীবিত ছেড়ে দিয়েছিল।’ মাত্র ৪ বছর বয়সের এক ফুটফুটে শিশুকন্যার ধর্ষকের প্রতি আদালত কীভাবে এত ‘মানবিক’ হল সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
২০০৭ সালে ৪ বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে রাম সিং (৪০)। সেই অপরাধে তার জেল হয়। ইন্দোরের অতিরিক্ত দায়েরা আদালত ২০০৯ সালে তার যাবজ্জীবন সাজা দেয়। দায়রা আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করে রাম সিং।
সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি সুবোধ অভয়ঙ্কর ও বিচারপতি সত্যেন্দ্র কুমার সিংয়ের বেঞ্চ জানায়, পিটিশনকারীর পৈশাচিক কাজটি বিবেচনা করে যে মহিলাদের মর্যাদার প্রতি কোনও সম্মান রাখে না, মাত্র ৪ বছর বয়সী এক শিশুকন্যার সঙ্গেও যৌন অপরাধ করার প্রবণতা রাখে, এই আদালত এটিকে উপযুক্ত মামলা বলে মনে করে না যেখানে ইতিমধ্যেই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাজা কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে নির্যাতিতা শিশুকন্যাকে জীবিত রেখে দেওয়ার ব্যাপারে সে যথেষ্ট মানবিক ছিল এই বিষয়টি বিবেচনা করে এই আদালত পিটিশনকারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কমিয়ে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার পক্ষপাতী। আইন মোতাবেক পিটিশনকারীকে ২০ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে। তবে আসামি ইতিমধ্যে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের মেয়াদ পূর্ণ করেছে।
ঘটনাটি ২০০৭ সালের ৩১ মে’র। ইন্দোরের আইটিআই গ্রাউন্ডের কাছে ঘটনাটি ঘটে। বিশেষ প্রয়োজনে শিশুকন্যাটির ঠাকুর্মা বাড়ির বাইরে গেলে শিশুটিও তার পিছন পিছন আসছিল। সেইসময় পাশের এক তাঁবুতে থাকা রাম সিং (তখন বয়স ছিল ২৫ বছর) শিশুটিকে ১টাকা দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। মেডিক্যাল রিপোর্টেও ধর্ষণের প্রমাণ মেলে।
যদিও রাম সিংয়ের আইনজীবীর দাবি ছিল, তাঁর মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে। কারণ এই মামলায় কোনও প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না। কিন্তু, হাইকোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মামলায় শুধুমাত্র প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ পাওয়া যায় না ঠিকই, তবে ধর্ষণের অভিযোগটি চিকিৎসা প্রমাণের মাধ্যমে যথাযথভাবে প্রমাণিত। আবেদনকারীর অপরাধ যুক্তিসঙ্গতভাবেই প্রমাণিত হয়েছে। তারপরই আদালত ‘মানবিক’ ধর্ষকের সাজার মেয়াদ কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।