পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রতিবেশী দেশগুলির অনুরোধে ফের গম রফতানিতে উদ্যোগ নিল ভারত। গত ১৩ মে গম রফতানি বন্ধ করে কেন্দ্র সরকার। আভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতেই গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেন্দ্র সরকার। কিন্তু ক্রমাগত প্রতিবেশী দেশগুলির অনুরোধে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠতে বাধ্য হল দিল্লির মোদি সরকার।
একদিকে করোনা অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সব মিলিয়ে বিশ্ব বাজারে আর্থিক মন্দা দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলিতে। প্রবলভাবে খাদ্য সংকট, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি প্রভাবে ভারতসহ প্রায় ১৯টি দেশ যুদ্ধ শুরু হওয়া থেকে খাদ্যপণ্য রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। যার প্রত্যক্ষ ফল পড়েছে বিশ্ববাজারে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এবার ফের বিশ্বকে খাবারের জোগান দিতে আবার গম রফতানি শুরু করল ভারত।
খাদ্যসংকটের মোকাবিলার জন্য পাঠানো হচ্ছে গম। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের বাজারে গমের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশগুলির অনুরোধে গম রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত শিথিল করা হয়েছে বলে জানান, কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সুধাংশু পাণ্ডে। খাদ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, ১৩ মে-র পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১৮ লক্ষ টন গম বিদেশে পাঠিয়েছে ভারত।
সুধাংশু পাণ্ডে বলেন, ‘বাংলাদেশ, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং আফগানিস্তানের মতো দেশে গম পাঠানো হয়েছে। অনেক
দেশেই তাঁদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে গম চেয়েছিল। সেই চাহিদা মেটাতে গম রফতানি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’।
গত ১৩ মে কেন্দ্র গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এর ফলে যথারীতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ভারতের এই সিদ্ধান্তে সংকটে পড়ে ইউরোপ ও এশিয়ার কয়েকটি দেশ। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, গম রফতানির অনুরোধ আসে বারোটিরও বেশি দেশ থেকে।
বিশ্বের অন্যতম গম উৎপাদনকারী দেশ ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধ আবহে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে গম রফতানিতেও রাশ টানে ইউক্রেন সরকার। এর ফলে সংকট বাড়ে। অন্য দিকে, এশিয়া তথা বিশ্বে অন্যতম গম উৎপাদনকারী ভারত।
যদিও কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সম্প্রতি জানান, গম রফতানির বাণিজ্যের অংশীদার হতে আমরা আগ্রহী নই। তবে কোনও দেশের খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য ভারত গম সরবরাহ করতে প্রস্তুত।
ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে জার্মানি সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন অনুমতি দিলে ভারত বাকি বিশ্বকে খাদ্যশস্যের জোগান দিতে এগিয়ে আসতে পারে। এবার সেই প্রতিশ্রুতি পালনেই তৎপর হল কেন্দ্র সরকার।