পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ সেনা কপ্টার দুর্ঘটনায় সস্ত্রীক প্রয়াত চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত। দেশের প্রথম প্রথম প্রতিরক্ষা প্রধান ছিলেন রাওয়াত। এই মর্মান্তিক চপার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতের। সুলুর থেকে ওয়েলিংটনে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। কপ্টারে বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে থাকা ১২ জন যাত্রীরও মৃত্যু হয়েছে।
মোট ১৪ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দেয় কপ্টার। বুধবার বেলা ১২টা বেজে ৪০ মিনিট নাগাদ তামিলনাড়ুর কুন্নুরে ভেঙে পড়ে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াতের সেনা কপ্টার। ওড়ার মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ভেঙে পড়ে সেনা কপ্টারটি। ঘটনাস্থল থেকে ঝলসানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কপ্টারে থাকা যাত্রীদের দেহ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে ট্যুইট করে কপ্টার দুর্ঘটনার খবর জানানো হয়। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশেরই দেহ ঝলসে যাওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় জানা যাবে।
কপ্টারে ছিলেন CDS বিপিন রাওয়াত (Bipin Rawat), তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত, ব্রিগেডিয়র এলএস লিদ্দের, লেফটেন্যান্ট কর্নেল হরজিন্দর সিং, এনকে গুরসেওয়াক সিং, এনকে জিতেন্দ্র কুমার, L/NK বিবেক কুমার, L/NK বি সাই তেজা, সৎপাল।
কীভাবে দুর্ঘটনার মুখে পড়ল প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াতের হেলিকপ্টার, তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সেনাবাহিনী। অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা থাকলেও, আপাতত দুর্ঘটনা মনে করেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতে একবার কপ্টার দুর্ঘটনার মুখে পড়ে বিপিন রাওয়াতের কপ্টার। নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরেও ভেঙে পড়ে তাঁর কপ্টার ‘চিতা’। কয়েক ফুট উপর থেকে ভেঙে পড়ে তাঁর কপ্টার। সেইসময় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু এই বার আর শেষরক্ষা হল না।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের উচ্চমানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। যাবতীয় চিকিৎসা সামগ্রীর দ্রুত ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাও শেষরক্ষা হল না, চলে গেলেন বিপিন রাওয়াত। ঘটনাস্থল থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে এই ওয়েলিংটন ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতাল সংকটজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয় তাঁকে। সেখানেই ৬ সদস্যের চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা চলেছে বিপিন রাওয়াতের। হাসপাতাল সূত্রে জানা জানানো হয় বিপিন রাওয়াতের শরীরের ৮৫ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ। প্রয়াণের কথা Tweet করে জানায় ভারতীয় সেনা।
অন্যদিকে আজ এই ঘটনায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসে। ৩০ মিনিট ধরে এই বৈঠক চলেছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সংসদে বিবৃতি দেবেন রাজনাথ সিং।
১৯৫৮ সালে উত্তরাখন্ডের ভারতের উত্তরাখণ্ড প্রদেশের পৌরি গাড়ওয়াল জেলায় যে কর্মময় জীবনের শুরু হয়েছিল তা শেষ হল চপার দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে। সব ধরনের যুদ্ধ পরিচালনার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। রাওয়াত ১০ বছর জঙ্গীবিরোধী অভিযানে নিয়োজিত ছিলেন। জম্মু-কাশ্মীর-এর উরিতে একটি কোম্পানির অধিনায়কত্ব, পূর্বাঞ্চলীয় সেক্টরের একটি পদাতিক ব্যাটেলিয়ন অধিনায়ক, রাষ্ট্রীয় রাইফেলসে (আধা-সামরিক বাহিনী) একজন ব্রিগেড অধিনায়ক, ১৯তম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি (সাউদার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার দায়িত্বের সঙ্গে পালন করেছেন রাওয়াত।
সেনাবাহিনী প্রধান হওয়ার আগে তিনি ‘ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ’ (উপসেনাবাহিনীপ্রধান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।