পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ইউক্রেনের শহরেও চলছে লাগাতার বোমা বর্ষণ ও শেল হামলা। ক্রমশই ভয়ঙ্কর হচ্ছে যুদ্ধের তীব্রতা। আর রাশিয়ার হামলায় প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতি মসজিদে শেল হামলায় শিশু, মহিলা-সহ মৃত্যু হল কমপক্ষে ৮০ জনের। রাশিয়ার এমনটাই অভিযোগ ইউক্রেনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক মহিলা ও শিশুও।
ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, মারিয়োপোলের সুলতান সুলেমান মসজিদে রুশ হামলা হয়েছে। ইউক্রেনের দাবি, রুশ হামলা নিজেদের বাঁচাতে মারিয়োপোলে ওই মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিলেন ৮০ জন। একসঙ্গে এতগুলো নিরীহ মানুষ প্রাণ হারালেন। এদের মধ্যে মহিলা ও শিশুরাও রয়েছে। ইউক্রেন সরকার এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তুরস্কের পরিবারগুলি মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিল। কারণ, যুদ্ধের সময় মসজিদের মতো ধর্মীয় স্থল কিংবা স্কুল, হাসপাতালে হামলা না চালানোই আন্তর্জাতিক দস্তুর। রাশিয়া সব জেনে শুনেও এই অমানবিক হামলা চালিয়েছে।
ক্রমশই আতঙ্ক বাড়ছে। সব থেকে সমস্যায় রয়েছে দেশের মানুষ। ইউক্রেনের আশঙ্কা, কিভ, খারকিভ এবং ডনবাস হামলা আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। একদিকে হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডা, তার মধ্যে আলো, খাবার নেই। এক নারকীয় অবস্থার মধ্যে দিন কাটছে দেশবাসীর।
উল্লেখ্য, পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে লড়াই করতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে স্বেচ্ছাসেবক যোদ্ধা নিয়োগের অনুমতি দিয়েছে রাশিয়ার সরকার। প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ‘যদি দেখেন এই মানুষগুলো অর্থ ছাড়াই স্বেচ্ছায় ডনবাসের লোকদের সাহায্য করতে আসছে, তবে যুদ্ধে তারা যা চায়, তা দেওয়া উচিত।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু পুতিনকে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ১৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দনবাসে আসতে প্রস্তুত রয়েছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার বিমানবাহিনী ও বিশেষায়িত কিছু বাহিনী সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকারকে টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই সিরীয় যোদ্ধাদের ইউক্রেনে পাঠানোর সম্ভাবনার কথাও বলছেন অনেকে। এদিন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রস্তাব করেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সেনার হস্তগত হওয়া পশ্চিমাদের তৈরি জ্যাভেলিন ও স্টিঙ্গার ক্ষেপণাস্ত্র দনবাসে রুশপপন্থী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হোক। জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ’রুশ সেনাদের হাতে আসা পশ্চিমাদের তৈরি অস্ত্রগুলো আমি লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক প্রজাতন্ত্রের সামরিক ইউনিটগুলোর হাতে তুলে দেওয়াকে সমর্থন করি। দয়া করে, এটাই করুন।’
এদিকে, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আগেই ঘোষণা করেছেন, রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে আগ্রহী বিদেশিদের ভিসার প্রয়োজন পড়বে না। বিশ্বের যেকোনও প্রান্তের মানুষ চাইলেই তাদের পক্ষে লড়তে পারবেন। এই ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশের মানুষ ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধে গিয়েছে। এবার রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে যেতে তৈরি মধ্যপ্রাচ্যের রুশপন্থী যোদ্ধারা।