পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ এর প্রথম দুই ম্যাচে ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে আগেই গ্রুপ পর্বে শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছিল পাকিস্তান। এবার আফগানিস্তানকেও হারিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন বাবর আজম রা। একটা সময় পেন্ডুলামের মত দুলছিল এই ম্যাচের ভাগ্য। যদিও ম্যাচের শেষ লগ্নে পরপর চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে জেতালেন আসিফ আলি।
এ ম্যাচের শুরুতে আফগানিস্তানের কাছে টসে হেরে ফিল্ডিং করতে নামে পাকিস্তান। আগে ব্যাট করতে নেমে ৫ ওভারে ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে আফগানিস্তান। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা নির্ধারিত কুড়ি ওভারে সব উইকেট এর বিনিময় স্কোরবোর্ডে ১৪৭ রান জমা করে। ১২.৫ ওভারে আফগানিস্তানের ষষ্ঠ উইকেট পড়ে যায়। সেখান থেকেই সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছেদ্য জুটি ৭১ রান যোগ করেন অধিনায়ক মুহাম্মদ নবী ও গুলবাদিন নাইব। মুহাম্মদ নবী ৩২ বলে ৩৫ রান ও গুলবাদিন নাইব ২৫ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
পাল্টা ব্যাট করতে নেমে পাক দলের পরিত্রাতা মুহাম্মদ রিজওয়ান অবশ্যই এদিন ব্যাট হাতে সফল হতে পারেননি। ৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। ১০ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর ছিল এক উইকেটে ৭২ রান। এরপর আক্রমণে আসেন রশিদ খান। ১১.১ ওভারে ২৫ বলে ৩০ রান করে আউট হন ফকর জামান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬৩ রান যোগ করেন বাবর আজম ও ফখর জামান। ১৪.১ ওভারে মুহাম্মদ হাফিজকে ১০ রানে আউট করে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে শততম উইকেট পেয়ে যান রশিদ খান।
বাবর আজমকে সাহায্য করতে ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে আসেন শোয়েব মালিক। ১৫ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১০১ রান। জয়ের জন্য তখনো পাঁচ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪৭ রান। ক্রিজে তখনও অপরাজিত ছিলেন বাবর আজম।৪৫ বলে তিনি হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ১৬ ওভারের শেষ বলে বাবর আজমকে বোল্ড করেন রশিদ। এতে নিজের ৪ ওভারে বোলিং কোটা শেষ করে রশিদ ২৬ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট পান। ৪৭ বলে ৫১ রান করেন মাঠ ছাড়েন বাবর।
বাবর ফেরাতে জয়ের জন্য তখনো পাকিস্তানের দরকার ছিল তিন ওভারে ২৬ রান। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান আসিফ আলি। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি একটি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ১৫ বলে ১৯ রান করে আউট হন শোয়েব। আসিফকে সাহায্য করতে ক্রিজে আসেন পাক ব্যাটসম্যান শাদাব খান। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। যদিও ম্যাচটি নিজেদের পকেটে পুরে নিতে শেষ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি ছিলেন না আসিফ। ১৯ তম ওভারে প্রথম তৃতীয় পঞ্চম এবং শেষ বলে চারটি বড় ছক্কা হাঁকিয়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন আসিফ আলি।
দুবাইয়ে আয়োজিত হওয়া পাকিস্তান আফগানিস্তান ম্যাচে ঘটল নজিরবিহীন ঘটনা। স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাইরে অশান্তিতে জড়িয়ে পড়লেন দুই দেশের সমর্থকরা। অথচ ম্যাচ শুরুর আগের দিন আফগান সমর্থকদের শান্তিতে খেলা উপভোগ করার কথা জানিয়েছিলেন রশিদ খান। এর আগে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান আফগানিস্তান ম্যাচ চলাকালীন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন উভয় দেশের সমর্থকরা। অবাঞ্ছিত সেই ঘটনা এড়াতে সমর্থকদের শান্ত থাকার কথা জানিয়েছিলেন রশিদ। কিন্তু কোথায় কি ? দুবাইয়ের স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাইরে দেখা গেল অশান্তির ছবি। এদিনের ম্যাচকে কেন্দ্র করে উভয় দেশের সমর্থক রা বারবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। যে অশান্তির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এদের মধ্যে অবশ্য উভয় দলের সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে দুবাই পুলিশ।