পুবের কলম প্রতিবেদক: ৮ ফেব্রয়ারি রাজ্য বাজেট পেশ হয়েছে বিধানসভায়। বাজেট শেষে ভাষন দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের অধীনে ৫ লক্ষ নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টির বার্তা দেন। বাজেট ঘোষনার ঠিক তার পরে পরেই এবার শুরু হতে চলেছে রাজ্যের জেলায় জেলায় ছড়িয়ে থাকা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ৩৫ হাজারের বেশি কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। প্রতিটি জেলায় জেলাশাসকের নেতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষ কমিটি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। যদিও কেন্দ্রের নয়া নিয়মে অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী ও সহায়িকা, উভয় পদে আবেদনের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। তবে আগে থেকে যারা সহায়িকা পদে আছেন তাঁদের ১০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তাঁরা কর্মী পদে পদোন্নতির সুযোগ পাবেন। এতদিন অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলেই সহায়িকা পদে আবেদন করা যেত। সেই নিয়ম আর থাকছে না।
রাজ্যে এখন মোট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৪৮১টি। প্রতি কেন্দ্রে ১ জন করে মহিলা কর্মী ও সহায়িকা থাকেন। বর্তমানে ২১ হাজার ৪৯২ কর্মী ও ১৩ হাজার ৯০৬টি সহায়িকার পদ শূন্য রয়েছে। সব মিলিয়ে শূন্যপদের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৩৯৮টি। সেই পদেই এবার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। এতদিন কর্মী পদে নিযুক্তির জন্য ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক ও সহায়িকা পদের জন্য অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হতে হতো। কেন্দ্র এই নিয়ম বদলে দু’টি পদের জন্যই উচ্চ মাধ্যমিক পাশকে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ধার্য করে। আগে নিয়োগের বয়সসীমা ছিল ১৮ থেকে ৪৫ বছর। সেটাও কমিয়ে ১৮ থেকে ৩৫ বছর করা হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে আপত্তি করেছিল। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে যাঁরা সহায়িকা হয়েছেন, কর্মী পদে তাঁদের পদোন্নতি আটকাবে না। সেক্ষেত্রে অবশ্য অন্তত ১০ বছর সহায়িকার কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে।
উল্লেখ্য, অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের খরচের ৬০ ভাগ দেয় কেন্দ্র। ৪০ ভাগ রাজ্য সরকার দেয়। রাজ্য সরকার এই নির্দিষ্ট খরচের বাইরেও কর্মী-সহায়িকাদের মাসিক ভাতার জন্য মাথাপিছু যথাক্রমে ৩,৭৫০ ও ৪,০৫০ টাকা করে দেয়। ফলে কর্মীরা সব মিলিয়ে ৮,৩৫০ টাকা এবং সহায়িকারা ৬,৩০০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন এখন। যারা নতুন করে নিয়োগ হবেন তাঁরাও এই বেতন বা ভাতা পাবেন। সব মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যে ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষের হাতে মাস মাইনের কাজ তুলে দিতে চলেছে।