পুবের কলম প্রতিবেদক: জুলুমবাজি ও তোলা আদায়ের বিরুদ্ধে কড়া পদেক্ষেপ নিল কলকাতা হাইকোর্ট। এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে। পাশাপাশি ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলা আধিকারিকের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফালতার দি সহরারহাট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলায় এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা৷ জুলুমবাজি, প্রাণনাশের হুমকি, তোলা চাওয়া, নার্সিংহোমে ঢুকে আতঙ্ক সৃষ্টি করা সহ নানা অভিযোগে হাইকোর্ট এই রিপোর্ট তলব করেছে৷
নার্সিংহোমের কর্ণধার জাহির ইসলাম বলেন, মাস কয়েক আগে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে আমার ১৫০ বেডের নার্সিংহোম বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ১ মার্চ থেকে আবার চালু করা হয়৷ ওই মাসের ২৩ তারিখ জেলা স্বাস্থ্যা আধিকারিকরা তদন্তে আসেন নার্সিংহোমে৷ তাঁর অভিযোগ, সেই দলের সঙ্গে বেআইনিভাবে ফলতার পুলিশ আধিকারিক, বিডিও এবং রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে চিকিৎসক, রোগীর আত্মীয়দের ও নার্সিংহোমের কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে ২ কোটি টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেন৷ এই বিষয়টি নিয়ে তিনি হাইকোর্টে মামলা করেন৷
নার্সিংহোম পক্ষের আইনজীবী কৌশিক চৌধুরি বলেন, স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে তদন্তের ক্ষেত্রে ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট ২০১৭ মেনে চলার কথা৷ কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা গেছে জেলা স্বাস্থ্য তদন্তকারী দলের সঙ্গে চড়াও হয় স্থানীয় পুলিশ আধিকারিক, বিডিও এবং অন্যান্য রাজনৈতিক পদাধিকারিরা৷ যা উল্লেখিত আইন লঙ্ঘন করেছে৷ এছাড়া তাঁর মক্কেলের থেকে তোলা চাওয়া হয়েছে, না হলে নার্সিংহোম বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা৷ হাইকোর্ট ২৪ ঘন্টার মধ্যে এফআইআর দায়ের করে এসপিকে নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷
এ বিষয়ে নার্সিংহোমের কর্ণধার জাহির ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশ মেনে ফলতা ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার সুপারের কাছে এফআইআরের জন্য আবেদন জানিয়েছি। দেখি কোনও সুরাহা হয় কি না। ফলতা থানার আইসি ও দ্বিতীয় অফিসার, বিডিও, বেলসিংহ–২ পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান, ফলতা পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি, শিক্ষা কর্মধ্যক্ষ, খাদ্য কর্মধ্যক্ষসহ মোট ৯জনের নাম রয়েছে অভিযোগের তালিকায়৷ নার্সিংহোমের কর্ণধারের পক্ষ থেকে এফআইআরের জন্য আবেদন জমা পড়লেও পরবর্তী পদক্ষেপ কতদূর এগিয়েছে সে বিষয়ে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলা আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি৷