দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুর: বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা দিবসের শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিতর্কের কেন্দ্রে উপাচার্য ও তার ঘনিষ্ঠ অধ্যাপক। প্রাণনাশের আশঙ্কায় ভীত, সন্ত্রস্ত হয়ে ই-মেলের মাধ্যমে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রটি।
বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে ১০০টি চারা গাছ রোপনের কর্মসূচি নেওয়া হয়। তার আগেই উপাচার্যের নির্দেশে এক অধ্যাপক ও বেশ কিছু বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মী এক পড়ুয়ার উপর চড়াও হয়ে তাকে মারধর করে ও প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ।
গত বছর ২৪ ডিসেম্বর বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্য নরেন্দ্র মোদী ও তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়ালও ভার্চুয়ালি এই উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। যদিও সেখানে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের পরে রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, এক বছর ধরে নানা অনুষ্ঠানে বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদযাপিত হবে। কিন্তু প্রথমে করোনা ও ভোট পর্বে সব অনুষ্ঠান বাতিল হয়।
শতবর্ষের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, আধিকারিক ও অধ্যাপকরা শুক্রবার সকাল থেকে পৌষমেলার মাঠ ও আশ্রম মাঠে অমলতাস, কৃষ্ণচূড়া, পলাশ প্রভৃতি গাছের চারা রোপন করেন।
তবে এই বৃক্ষরোপণের স্থান হিসেবে পৌষমেলার মাঠ ও আশ্রম মাঠ (যেখানে বসন্ত উৎসব আয়োজিত হয়) বেছে নেওয়া নিয়েও আবার প্রশ্ন ওঠে। গোটা মাঠজুড়ে গাছ লাগানো হলে ভবিষ্যতে পৌষমেলা বা বসন্ত উৎসব আয়োজনে তা অন্তরায় হয়ে উঠবে কিনা, তাই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
এরমধ্যে বিশ্বভারতীর অর্থনীতি ও রাজনীতি বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র সোমনাথ সৌ –এর উপর চড়াও হয়ে ব্যাপক মারধর ও তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেবার অভিযোগ উঠল।
পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া অভিযোগ পত্রে সোমনাথ সৌ অভিযোগ করেন শুক্রবার সকাল সড়ে ন’টা নাগাদ সে যখন মোটর বাইক নিয়ে বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিসের সামনে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁকে রাস্তার পাশে গাড়ি পার্কিং করতে বলা হয়। সেই সময় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর প্ররোচনায় ও প্রত্যক্ষ নির্দেশে শিক্ষাসত্র বিভাগের শিক্ষক গৌতম সাহা তাকে হুমকি দিয়ে অবিলম্বে সেই স্থান ছেড়ে দেবার নির্দেশ দেন। কিছু অজ্ঞাত পরিচয় নিরাপত্তা কর্মীকে দিয়ে তাকে মারা হয় বলে অভিযোগ করেছেন।
সোমনাথ সৌ আরও অভিযোগ করেন গৌতম সাহা তাকে প্রাণনাশ ও ‘ক্যাম্পাসের বাইরে আজকেই দেখে নেবার’ হুমকি দেন।
শান্তিনিকেতন থানায় এই অভিযোগ করে সোমনাথ বলেন, “এই মুহূর্তে আমি প্রাণনাশের আশঙ্কায় ভুগছি, আমাকে সঠিক নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক”।
যদিও এই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভবপর হয় নি।