ইনামুল হক, বসিরহাটঃ সুদূর আরব ভূমিতে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে বাংলার একজন মহীয়সী নারী সাওলাতুন নেছা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দেগঙ্গার ভাসিলিয়া সাতহাতিয়া গ্রামের অর্থশালী গৃহবধূ সাওলাতুন নেছা ১৮৭৩ সালে ইসলামী শিক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছিলেন সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে। যা আজও মাদ্রাসা সাওলাতিয়া নামে একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দ্বীনি শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে চলেছে।
তারই পথ অনুসরণ করে এই বাংলায় আর এক ধর্মপরায়ণা মহিলা নিজের জন্মভূমিতেই স্থাপন করলেন অসহায় এতিম শিশুদের ভরণপোষণ ও শিক্ষার জন্য একটি এতিমখানা। বসিরহাটের সাঁইপালার বাসিন্দা রাফিজা বিবি নামে এক সাধারণ মুসলিম নারী তার স্বামী আলহাজ্ব জমাত আলী মন্ডল,
পুত্র রমজান আলী মন্ডল ও মিজানুর আলী মন্ডলের সহযোগিতায় বসিরহাট ১ ব্লকের গাছা আখারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দ কাটি পূর্বপাড়ায় আলমবাগ এতিমখানা নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করলেন। বসিরহাটের প্রখ্যাত পীর আল্লামা রুহুল আমিন এর সুযোগ্য পৌত্র পীর মাওলানা নুরুল আমিন সাহেবের হাত দিয়ে সোমবার উদ্বোধন হলো এই এতিমখানাটি। তিনি
এই প্রতিষ্ঠানের সফলতা এবং আল্লাহ্র দরবারে কবুল হওয়ার জন্য দোয়া করেন। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওস্তাযুল হোফফাজ পানিগোবরা হুজুর আব্দুল আজিজ রহ.এর প্রধানতম খলিফা বিশিষ্ট শিক্ষক হাফেজ মোঃ আমীর আলী, বসিরহাট শাহী মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আশিকুল ইসলাম, মাওলানাবাগ দরবার শরীফের সমাজসেবী পীরজাদা মোহাম্মদ মিনহাজুল আমিন, প্রাক্তন শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ আলী, মাওলানা আফসার আলী, শিক্ষক মাওলানা মোঃ আব্দুর হাফেজ মোঃ আব্দুল খলিল , এতিমখানার শিক্ষক হাফেজ ক্বারী মাওলানা আলমগীর গাজী, কোষাধ্যক্ষ মোঃ আক্তার হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আলহাজ্ব মোঃ কুপান মন্ডল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সম্পাদক মোঃ আব্দুর রহিম। প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অন্যতম পৃষ্ঠপোষক রমজান আলী মন্ডল বলেন, জ্বীন ও ইনসান এর সম্প্রীতির নিদর্শন স্বরূপ আমার মা রাফিজা বিবির এই ইচ্ছা পূরণে অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। মা হালিমা যেমন এতিম শিশু নবী সা.কে নিজে উটের পিঠে করে এনে তাকে পালন করেছিলেন আমরাও অসহায় এতিমের খোঁজ নিয়ে তাকে এখানে এনে প্রতিপালন করতে চাই। বসিরহাট শাহী মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আশিকুল ইসলাম বলেন, এতিমকে এতিম হিসেবে চিহ্নিত না করে দিয়ে তাকে নিজের সন্তান মনে করে তার প্রতি দায়িত্ব পালন করা উচিত। আল্লাহর নবী সা. এঁর এটাই ছিল আদর্শ।