পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ আহমেদাবাদ বিস্ফোরণ মামলায় আদালতের রায়কে স্বাগতকে জানিয়ে মুসলিমদের নিয়ে ‘ব্যঙ্গচিত্র’ তৈরি করে তা ট্যুইটারে পোস্ট করে নেটিজেনদের কটাক্ষের শিকার হল বিজেপি। বিজেপির এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়ে সোচ্চার হয়েছেন ট্যুইটার ব্যবহারকারীরা।
এর মধ্যেই অনেকেই লিখেছেন, ‘এই ধরনের সোশ্যাল একটি প্ল্যাটফর্মে বিজেপি কিভাবে একটি সম্প্রদায়কে নিয়ে এই ধরনের রসিকতা করতে পারে? আবার কেউ লিখেছেন, ‘বিজেপি, আরএসএস-এর এই ধরনের কর্মকাণ্ড দেখতে দেখতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি’। অপর এক ট্যুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এক ঘৃণাভরা পোস্ট করেছে গুজরাটের বিজেপি ইউনিট’। আরও এক ব্যবহারকারীর বক্তব্য, ‘বিজেপির লজ্জা পাওয়া উচিত’।
নেটিজেনদের এইভাবে সোচ্চার হতেই ট্যুইটারের পক্ষ থেকে গুজরাট বিজেপি ইউনিটের ওই ব্যঙ্গচিত্রটিকে মুছে ফেলা হয়। এক ট্যুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এই ধরনের ব্যঙ্গচিত্র ক্ষতিকারক, অপমানজনক। বিজেপি আর নিজেকে কত ছোট করবে।’
এই ব্যঙ্গচিত্রে দেখানো হয়েছে, ‘মানুষের মাথা ফাঁসির দড়িতে ঝুলছে। যাদের দেখানো হয়েছে তাদের সকলের মাথায় টুপি পরা রয়েছে। চিত্রের ডানদিকে লেখা রয়েছে, ‘সত্যমেব জয়তে’। এই ব্যঙ্গচিত্রের পোস্টটি গুজরাট বিজেপির ইন্সটাগ্রামেও পোস্ট করা হয়। এর পরেই বিজেপি বিরুদ্ধে চরম ধিক্কারে সোচ্চার হয়ে ওঠেন নেটিজেনরা।
গুজরাটের বিজেপির মুখপাত্র যগনেশ দাভে রবিবার বলেন, ‘আহমেদাবাদের ধারাবাহিক বিস্ফোরণ মামলার রায়কে স্বাগত জানিয়ে যে ট্যুইট করা হয়েছিল, সেটি নিয়ে কেউ বা কারা অভিযোগ জানিয়েছে। তার পরেই এই পোস্টটিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরা চলা আহমেহদাবাদ মামলার রায়দান ঘোষণা করে গুজরাটের বিশেষ আদালত। ২০০৮ সালে হওয়া এই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের কাণ্ডে একসঙ্গে ৩৮ জনের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে আদালত। দোষী সাব্যস্ত হয়েছে ৪৯ জন। বাকি ১১জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর আগে এই মামলায় ২৮ জনকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়।
২০০৮ সালের ২৬ জুলাই গুজরাটের আহমেদাবাদে ৭০ মিনিটের মধ্যেই গোটা শহরজুড়ে পরপর ২১টি ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হয়। প্রাণ হারান ৫৬ জন। আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০০। বিস্ফোরণের কয়েকদিন পরে সুরাট শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে বোমা উদ্ধার হয়। আহমেদাবাদে মোট ২০টি এফআইআর ও সুরাটে ১৫টি এফআইআর দায়ের করা হয়। মোট ৩৫টি এফআইআর মিলিয়ে গুজরাট বিশেষ আদালতে শুনানি শুরু হয়। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, এই বিস্ফোরণের যড়যন্ত্র করেছিল ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামের এক জঙ্গী গোষ্ঠী।