পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ৮০ বছর আগে স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে সোভিয়েত রাশিয়ার কাছে পরাজিত হয়েছিল হিটলারের জার্মানি। সেই ঘটনার সঙ্গে ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযানকে তুলনা করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক পাঠানোর জার্মান সিদ্ধান্তকে ইঙ্গিত করে পুতিন বলেন, ‘ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এটা অবিশ্বাস্য, কিন্তু সত্য। আমরা ফের জার্মান লেপার্ড ট্যাঙ্কের হুমকির মুখোমুখি।’ একইসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘রাশিয়ার জয় আসন্ন।’ বৃহস্পতিবার ভলগোগ্রাদে (পূর্বতন নাম স্তালিনগ্রাদ) স্তালিনগ্রাদ যুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পুতিন বলেন, ‘একসময় জার্মান বাহিনীকে এই মাটিতেই আটকে দেওয়া হয়েছিল। রাশিয়াকে ফের জার্মান লেপার্ড ট্যাঙ্কের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অনেক নাটকীয়তার পর জার্মানি ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক লেপার্ড ট্যাঙ্ক দিতে সম্মত হয়েছে। সেই ট্যাঙ্ক নিয়ে রুশ বাহিনীর মোকাবিলা করছে ইউক্রেন।’ রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যারা রাশিয়াকে যুদ্ধে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন, তারা বুঝতে পারছেন না। রাশিয়ার সঙ্গে অত্যাধুনিক যুদ্ধ তাদের জন্য কঠিন হবে বলেই মনে হচ্ছে। আমরা আমাদের ট্যাঙ্ক তাদের সীমান্তে পাঠাচ্ছি না, কিন্তু আমাদের তো জবাব দিতেই হবে। সেই জবাব কেবল সাঁজোয়া অস্ত্রশস্ত্রে হবে না। সবারই সেটা বোঝা উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলো সম্মিলিতভাবে যত নতুন অস্ত্র পাঠাবে, রাশিয়াও তার প্রতিক্রিয়া দেখানোর সম্ভাবনাকে আরও বেশি করে কাজে লাগাবে।’ স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে প্রায় ৯১ হাজার জার্মান সেনা রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সেই লড়াইয়ে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আর কোনও ফ্রন্ট এত প্রাণহানি হয়নি। ঐতিহাসিকদের তথ্যমতে, স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে রাশিয়ার বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ কৌশল অবলম্বন করেছিল। শীতের জন্য অপেক্ষা করেছিল তারা। সব কিছু ধ্বংস করে তারা পিছিয়ে গিয়েছিল। জার্মান বাহিনীও সেই সুযোগে রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে পড়ে। এরপরেই শুরু হয় শীতকাল। জার্মান বাহিনীকে ঘিরে ধরে রাশিয়ার বাহিনী। ঠান্ডায় সামান্য মাথা গোঁজার জায়গাও পায়নি জার্মান সেনারা। ঠান্ডাতেই মৃত্যু হয়েছিল বহু সেনার। এর আগে একই কৌশল ফ্রেঞ্চ নেতা নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে এবারও সেই একই কৌশল নেওয়ার চেষ্টা করেছিল রাশিয়া। তবে বাস্তবে তা সফল হয়নি। রুশ প্রেসিডেন্টের এ ধরনের বক্তব্য অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে ইউক্রেন। তাদের বক্তব্য, আক্রমণ রাশিয়া চালিয়েছে, ইউক্রেন নয়। রাশিয়ার এই যুদ্ধ জেতার কোনও সম্ভাবনা নেই।*প্রসঙ্গত, গতবছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর যে পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভকে নানাভাবে সহায়তা করছে জার্মানি তার অন্যতম।