পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানকে সামনে রেখে শিক্ষাক্ষেত্রে অধ্যক্ষকে হেনস্থা করার ঘটনা ঘটল আহমেদাবাদে। ছাত্রকে বকুনি দেওয়ার অপরাধে আহমেদাবাদের অধ্যক্ষের ওপর চড়াও হলেন এবিভিপি’র সদস্যরা। ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বলে অধ্যক্ষকে বকুনি দেওয়ার জন্য ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। গোটা ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
জানা গিয়েছে, ক্লাসেই কয়েকজন ছাত্র জয় শ্রীরাম স্লোগান দিচ্ছিল। বিরক্ত করার জন্য অধ্যক্ষ তাদের বকুনি দেন। তার পরেই অধ্যক্ষের ওপরে চড়াও হন আরএসএস-শাখা সদস্য অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থীর পরিষদ (এবিভিপি)-এর কর্মীরা। অধ্যক্ষকে জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করা সহ তিরস্কৃত ছাত্রদেরও ক্ষমা চাইতেও বাধ্য করেন তারা। শনিবার এই ঘটনার সূত্রপাত হয় আহমেদাবাদের এইচএ কলেজে।
কলেজের একজন শিক্ষক ক্লাসের পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ তুলে ওই ছাত্রদের সঙ্গে করে অধ্যক্ষ সঞ্জয় ভাকিলের ঘরে নিয়ে এসে জানিয়েছিলেন, তিনি ক্লাস করাতে পারছেন না। অনবরত তারা ক্লাসে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এর পরেই অধ্যক্ষ ওই ছাত্রদের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাদের সতর্ক করেন। শিক্ষকের অভিযোগ, ওই ছাত্ররা ক্লাসে বসেই জোরে জোরে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিচ্ছিলেন। এর ফলে তার ক্লাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল। ওই ছাত্ররা ক্ষমা চাওয়ার পর ব্যাপারটির নিষ্পত্তি হয়েছিল বলেই মনে করা হয়। কিন্তু শনিবার এই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। কয়েকজন এবিভিপির সদস্য অধ্যক্ষ সঞ্জয় ভাকিলের ঘরে ঢুকে হই হট্টোগোল শুরু করে। তাদের দাবি ছিল, স্লোগান দিতে বাধা দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া হয়েছে। এখনই ওই তিরস্কৃত ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অধ্যক্ষকে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে হবে। এবিভিপি কর্মী সদস্যদের অধ্যক্ষ সঞ্জয় ভাকিল জানান, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার ইচ্ছে নেই তাঁর। তিনি সেই রকম কোনও কাজ করেননি। তবে তার কাজের জন্য যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন তাহলে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু এবিভিপি’র সদস্যরা অধ্যক্ষের কথায় কোনওভাবেই কর্ণপাত না করে তাঁকে দিয়ে জোর করে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে বাধ্য করেন। চাপের মুখে তিরস্কৃত ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন অধ্যক্ষ সঞ্জয় ভাকিল।
এইচএ কলেজটি জিএলএস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। আহমেদাবাদ শহরের ল গার্ডেনের কাছে জিএলএস ক্যাম্পাসের ঘটনা।
জিএলএস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন বালচন্দ্র যোশী জানিয়েছেন, কয়েকজন রাজনৈতিক দলের কর্মী সদস্য, ছাত্ররা ক্লাসে বিরক্ত করছিল। একজন শিক্ষক তাদের আমার কাছেও নিয়ে এসে ঘটনার বিবরণ দিয়েছিলেন। আমিও তাদের তিরস্কার করি। কিন্তু পরে কিছু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্যরা অধ্যক্ষের ওপরে এসে চড়াও হয়। তাঁকে দিয়ে জোর করে রামের নামে স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়।