পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আবু উবাইদা। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজায় এখন এই নামটি সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। কে এই আবু উবাইদা?
হামাস আন্দোলনের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের সামরিক মুখপাত্র তিনি। যাকে বাংলাতে মাস্ক-ম্যান (মুখোশধারী ব্যক্তি) বলা হয়ে থাকে। যার আরবি অর্থ আল-মুলাথাম। ইসরাইলিদের কাছে ত্রাসের আর এক নাম আবু উবাইদা।
হামাস অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড ঘোষণার পর থেকে আবু উবাইদা সমস্ত প্রেস কনফারেন্সগুলিতে যোগ দিয়েছেন। বিনা মাস্কে আজ পর্যন্ত তাঁকে কেউ দেখেনি বললেই চলে। তাঁকে নিয়ে বিশ্বের কৌতুহল কম নই।
গাজা স্ট্রিপে ইসরাইলি যুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকেই আবু উবাইদা প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। হামাসের ফিলিস্তিনি সমর্থকদের মতে, ইসরাইলি মুখপাত্রদের মুখে অসাধারণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে মিডিয়ায় উত্থাপিত সমস্ত প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিয়েছেন তিনি।
আবু উবাইদা ২০০২ সালে আল-কাসেম ব্রিগেডের কর্মী হিসেবে প্রথম পরিচিত লাভ করে। তখন থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটি মিডিয়া ট্রায়ালে তাঁর দেখা মিলেছে। কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে ।
তবে আল-কাসামের প্রাক্তন নেতা ‘শহিদ’ ইমাদ আকেলের দেখানো পথ অনুসরণ করেই নিজেদের মুখ ঢেকে রাখেন তিনি। কখনই সর্বসমক্ষে নিজের চেহারা উন্মোচন করেননি আবু।
২০০৫ সালে গাজা থেকে ইসরাইলি প্রত্যাহারের পর, আবু উবাইদা আনুষ্ঠানিকভাবে আল-কাসামের মুখপাত্র নিযুক্ত হন। গাজার নালিয়া শহরের বাসিন্দা তিনি। যা ১৯৪৮ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার সময় ইসরাইলের অধীনে চলে যায়।
তবে বর্তমানে তিনি গাজার উত্তর-পূর্বে জাবালিয়াতে বাস করে বলেই ইসরাইল সেনারা মনে করেন। যদিও এই কথা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন আবু উবাইদা।
জানা গেছে, ২০০৮, ২০১২, ২০১৪ এবং চলমান যুদ্ধে তাঁর বাড়িতে একাধিকবার বোমা-বর্ষণ হয়েছে। ২০১৪ সালের যুদ্ধে, তিনি স্থল সংঘর্ষের মধ্যে ইসরাইলি সৈন্য শউল অ্যারনকে অপহরণ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আবু-উবাইদার ট্যুইটার, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকলেও গাজায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হওয়ার পর থেকে সেটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে আছে। বর্তমান আবু তাঁর বার্তা গুলি আল-কাসাম ব্রিগেডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন।
তার ভিডিয়োগুলি সম্প্রচার করতে টেলিগ্রাম অ্যাপ্লিকেশন এবং “আল-আকসা” চ্যানেল ব্যবহার করেন, যা বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেল এবং মিডিয়া আউটলেট দ্বারা পুনঃপ্রকাশিত হয়। যদিও আবু-উবাইদার সম্পর্কে প্রোপাগান্ডা ছড়াতে কোনও কসুর রাখেনি ইহুদি বাহিনী।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের যুদ্ধের আগে, আবু উবাইদা ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে ফ্যাকাল্টি অফ ফান্ডামেন্টাল অফ রিলিজিয়ন থেকে “ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলামের পবিত্র ভূমি’’ নামে একটি মাস্টার্স থিসিস উপস্থাপন করেছিলেন।
আজ, তাকে “ইসরাইলের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের” অগ্রনায়ক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।