পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: স্বার্থে আঘাত না লাগলে নরেন্দ্র মোদি বা বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না কেজরিওয়াল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তিনি ‘বড় ভাই’ বলে সম্বোধনও করেছেন আবার ছোট ভাইয়ের মত মোদির সিএএ, এনআরসি, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের মত জনবিরোধী নীতিতে তাঁকে পূর্ণ সমর্থনও জানিয়েছেন। এবারও ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) ইস্যুতে জোর গলায় বিজেপিকে সমর্থন করেছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু ইউসিসি-তে সমর্থন জুগিয়ে পঞ্জাবে চাপে পড়তে পারেন কেজরিওয়াল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কেজরিওয়ালের ইউসিসি নিয়ে মুখ খোলার পর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন, শিরোমনি আকালি দলের নেতা ড. দলজিত সিং চিমা। তিনি বলেন, কেজরিওয়ালের আসল চেহারা এতদিনে ধরা পড়েছে। আপ রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তাদের সঙ্গে বিজেপির কোনও পার্থক্য নেই।
দেশের মুসলমানদের বিরোধ করে হিন্দুত্ববাদের পালে হাওয়া দিতেই ইউসিসি-র কথা তুলে ধরেছে বিজেপি। কিন্তু ইউসিসি শুধু মুসলমানদের পার্সোনাল ল কে চ্যালেঞ্জ করবে না, অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রেও সেকথা খাটবে। শিখরাও এর বিরোধীতায় নামবে। দলজিত সিং চিমার মতে, তাঁদের দল প্রথম থেকেই ইউসিসি-র বিরোধীতা করেছিল।
পঞ্জাবের ৬০ শতাংশ মানুষ শিখ সম্প্রদায়ের আর তারা কখনই ইউসিসি মেনে নেবে না। ব্যক্তিগত আইনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করলে শিখরা বরাবরই বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হেঁটেছে। এবারও তার বিকল্প হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে দিল্লিতেও শিখরা যথেষ্ট প্রভাবশালী।
শিখদের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন ও নেতারা বারবার অভিযোগ করেছে, বিজেপি হিন্দুত্ববাদের জিগির তুলতে গিয়ে শিখদের ইতিহাস মোছার চেষ্টা করেছে।
গতবছর দেশের গুরুত্বপূর্ণ গুরুদ্বারাগুলির নিয়ন্ত্রক সংস্থা, শোরোমণি গুরুদ্বারা প্রবন্ধক কমিটি ইউসিসি-র বিরুদ্ধে বিবৃতি জারি করে জানিয়েছিল, ইউসিসি-র সঙ্গে দেশের স্বার্থের কোনও সম্পর্ক নেই। ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টায় ইউসিসি লাগু করার চেষ্টা করছে বিজেপি। আরএএসএস-র এজেন্ডাকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করে বিজেপি। ইউসিসি চালু করার চেষ্টা তারই একটি অংশ।
পঞ্জাবের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় কখনই ইউসিসিকে সমর্থন করবে না, ফলে জনরোষের মুখোমুখি হবে আপ শাসিত পঞ্জাব সরকার। আর তার সুযোগ নিতে পারে শিরোমণি আকালি দল ও কংগ্রেস বলে মত রাজনৈতিক মহলের।