পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ সব অপেক্ষার অবসান। ঘটলনা কোন মিরাকেল। কাশ্মীরের সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে একে একে বের করে আনা হল ১০ শ্রমিকের নিথর দেহ। বৃহস্পতিবার জম্মুর রামবান টানেলে কাজ করার সময় ধস নামে। ৷ শনিবার সকলের মৃতদেহ বের করে আনা হয় ৷ এঁদের মধ্যে আছেন রাজ্যের ৫ শ্রমিক । ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়া মোট ৯ জন শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করে আনেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা । এই নিয়ে রামবান জেলায় টানেলে ধসের ঘটনায় মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে । নিহতরা হলেন যাদব রায় (২৩), গৌতম রায় (২২), সুধীর রায় (৩১), দীপক রায় (৩৩), পরিমল রায় (৩৮), জানা গিয়েছে মৃত পাঁচ জনই পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়ির বাসিন্দা। শোকের ছায়া পরিবারে। এছাড়াও নিহতদের মধ্যে আছেন অসমের শ্রমিক শিব চৌহান, (২৬)। নবরাজ চৌধুরী (২৬) এবং খুশি রাম (২৫), দুজনেই নেপালের বাসিন্দা । মুজাফফর (৩৮) ও ইসরাত (৩০), দুজনেই স্থানীয় বাসিন্দা বলে জানিয়েছে জম্মু প্রশাসন। দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। ( ৪৩২)
পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর বোধহয় গরম ভাতের গন্ধ। তাই কাশ্মীরে যখন পর্যটকরা যান নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে ওঁদের চোখে তখন বাড়ির লোকের মুখে দুমুঠো গরম ভাত তুলে দেওয়ার আকুতি। এই আকুতি তাদের নিয়ে যায় ভূস্বর্গে। কফিনবন্দী নিথর দেহ ফিরছে জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ির নিহত পাঁচযুবকের। ।রামবান টানেল ধসে পড়ে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাতে রামবান টানেলে ধস নামে। তাতে আটকে পড়েন ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক। যার মধ্যে ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ির ওই পাঁচ যুবকও।
প্রতি বছর ধূপগুড়ির গধেয়ার কুঠি এবং মাগুর মারি গ্রাম থেকে ৫০ জনের বেশি যুবক কাশ্মীর যান না বেড়াতে নয় কাজের উদ্দেশ্যে।একটা সময় ছিল যখন বিহার, ওড়িশা থেকে এই রাজ্যে কাজের জন্য আসতেন অনেকেই। কল মিস্ত্রী, রিক্সাচালক, রান্নার ঠাকুর , জল বওয়ার ভারী হিসেবে তারা কাজ করতেন।
তবে সময় পরিস্থিতি পাল্টেছে। এখন এই রাজ্য থেকে অনেকেই যাচ্ছেন ভিনরাজ্যে কাজের উদ্দেশ্যে। সেইসব পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা আমাদের দেখিয়েছে করোনা অতিমারী।
ধূপগুড়ির বাসিন্দাদেত আয়ের মূল উৎস আলু চাষ। তবে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাস জমিতে কাজ থাকে। তারপর বাকি আটমাস কাজের জন্য যেতে হয়া রাজ্যের বাইরে। প্রতিবছরেই এই যুবকেরা যান জম্মু-কাশ্মীরে বাকি আটমাসের অর্থ উপার্জনের আশায়।
গত ৩ মে ধূপগুড়ির গধেয়ার কুঠি, মাগুর মারি গ্রাম থেকে ১৫ জন যুবক শ্রমিকের কাজ করতে কাশ্মীর পাড়ি দেন। বাংলার শ্রমিকরা ওই দলের সদস্য।রামবান টানেলে কাজ করছিলেন তারা। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ ওই শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন।
মহুয়ার অভিযোগ, বাংলার এই যুবকদের এই পরিনতির জন্য কেন্দ্র সরকার অনেকাংশেই দায়ী। কারণ, কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে। গত তিন মাস ধরে কাজ করেও মজুরি পাচ্ছেন না মাগুর মারি, গধেয়ার কুঠি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বহু শ্রমিক। মহুয়া আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন গ্রামের মানুষ গ্রামেই কাজ করুক। কিন্তু কেন্দ্র পদে পদে বাধা দিচ্ছে।”জীবন দিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার মাসুল দিলেন জলপাইগুড়ি ধু পগুড়ির এই যুবকরা