পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: পড়ুয়াদের আত্মহত্যা রুখতে নয়া পদক্ষেপ নিল কোটা কর্তৃপক্ষ। নির্দেশনামায় এবার থেকে সপ্তাহে একদিন পড়ুয়াদের অর্ধদিবস মজা ও আনন্দের জন্য ব্যয় করার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। এছাড়াও আগামী ২ মাসের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে পরীক্ষা কার্যক্রম। কোটায় পর পর ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায়, পড়াশোনার প্রত্যাধিক চাপ ও অভিভাবকদের অযৌক্তিক প্রত্যাশাকেই অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্রমবর্ধমান ঘটনায় আতঙ্কের অন্য এক নাম হয়ে উঠেছে কোটা! ভারতের স্বনামধন্য এই ‘কোচিং হাব’ এখন মৃত্যুপুরী। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ২৪ জন পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর মিলেছে। পড়ুয়াদের আত্মহত্যা রুখতে ইতিমধ্যেই একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসন। তারপরেও মৃত্যুমিছিল ঠেকাতে কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে কোটা কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। সোমবার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈঠকে বসেন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। কোটায় পড়ুয়াদের আত্মহত্যা রুখতে ইতিমধ্যেই প্রতিটি কোচিং সেন্টার ও হোস্টেলে অ্যান্টি হ্যাঙ্গিং ডিভাইস লাগানো সহ একাধিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জনসংখ্যা বিপুল হলেও রাজস্থানের ছোট্ট শহর কোটা। অধিকাংশ বাড়িতেই থাকে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পড়ুয়ারা। এখানে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের কেবল একটাই স্বপ্ন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বিশেষ করে ‘আইআইটি’। আর সেই স্বপ্নকে কেন্দ্র করে রাত দিন যুদ্ধ, দিন রাত মেহনত। বর্তমান সময়ে তৈরি হওয়া ইঁদুর দৌড়ের লড়াই’য়ে অযৌক্তিক আকাঙ্ক্ষা থেকে সৃষ্টি হয় মানসিক অবসাদ। যার জেরে সম্প্রতি সময়ে বেড়ে চলেছে আত্মহত্যার মতো ঘটনা। কেউ দিচ্ছেন গলায় ফাঁস কেউ বা বারান্দা বা ছাদ থেকে ঝাঁপ। তবে র্যাগিং-তথ্যকেও খাটো করে দেখছেন না একাংশ। জানা গেছে, মৃত পড়ুয়াদের মধ্যে কেউ ফোনে মায়ের সঙ্গে শেষ কথা বলেছিলেন, কেউ আবার বন্ধুদের সঙ্গে হাসিমুখে আড্ডা মেরেছিলেন আধ ঘণ্টা আগেও। বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশের মতে, কোটার ঝা চকচকে প্রাণোজ্জ্বল চেহারার আদলে রয়েছে উচ্চাকাঙ্ক্ষার এক আকাশচুম্বী প্রত্যাশা। সেই ‘সাফল্যের’ আঁধারে ডুবেই চরম পদক্ষেপ নিচ্ছেন পড়ুয়ার!