পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: লোহিত সাগরে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ নাকচ করেছে ইরান। ইয়েমেনের আনসারুল্লাহরা (হুতি) লোহিত সাগরে ইসরাইলগামী জাহাজকে কোনওমতেই চলাফেরা করতে দিচ্ছে না। ফলে ক্ষতি হচ্ছে ইহুদিবাদীদের। আমেরিকা দশ দেশকে সঙ্গে নিয়ে লোহিত সাগরে টহল দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
তাতেও ভয় পায়নি হুতিরা। তারা লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আরব সাগরে গুজরাতের উপকূলের ২০০ মাইলের মধ্যে একটি জাহাজে ড্রোন হামলা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে দশটায় লোহিত সাগরে একটি ভারতীয় জাহাজে হামলা চালায় হুতিরা। আমেরিকা হুতি হামলার সমস্ত দায় চাপাতে চাইছে ইরানের উপর।
ইরানের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্র পাশে না থাকলে ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ গোষ্ঠী বা হুতিরা কীভাবে আক্রমণ করার সাহস পাচ্ছে, প্রশ্ন পেন্টাগনের। তবে লোহিত সাগরে ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে ইয়েমেনের হুতি যোদ্ধাদের হামলায় ইরান ‘গভীরভাবে জড়িত’ বলে যে অভিযোগ মার্কিন সরকার করেছে তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে তেহরান।
রবিবার ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আবদুল্লাহিয়ান বলেন, এই অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন। গাজার প্রতিরক্ষা ও সমর্থনে এটা সম্পূর্ণই ইয়েমেনের সিদ্ধান্ত। ইয়েমেন নিজস্ব শক্তিতে হামলা চালাচ্ছে, ইরান পিছনে নেই। ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাকেরি এক সাক্ষাৎকারেও ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, হুতিরা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করছে।
পেন্টাগনের হিসাব অনুযায়ী, লোহিত সাগরে এ পর্যন্ত ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত ১০টি বাণিজ্যিক জাহাজে ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেন। হুতি যোদ্ধাদের পাশাপাশি তাদের সমর্থিত ইয়েমেনের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছেন। হোয়াইট হাউস শুক্রবার কথিত গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে দাবি করেছিল, লোহিত সাগরের জাহাজগুলিতে হামলা চালাতে ঘনিষ্ঠভাবে সাহায্য করছে তেহরান। মার্কিন সরকার দাবি করে, কোন কোন জাহাজে হামলা চালাতে হবে তার গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করার পাশাপাশি যেসব অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে হবে তাও ইয়েমেনকে সরবরাহ করছে ইরান।
হোয়াইট হাউজের এ দাবি নাকচ করে দিয়ে ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হুতি যোদ্ধাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা রয়েছে। তারা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত ও সামর্থ্য দিয়ে হামলা চালাচ্ছে। আলী বাকেরি আরও বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে আমেরিকা ও ইসরাইল প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোর হাতে মারা খাচ্ছে। প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোর নিজস্ব শক্তি রয়েছে যা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবস্থায় আমেরিকা বা ইসরাইল নেই। ইরান গত এক দশক ধরে বলে আসছে, ইয়েমেনের হুতি যোদ্ধাদের প্রতি তেহরানের রাজনৈতিক সমর্থন থাকলেও ইরান এই আন্দোলনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে না।