এস জে আব্বাস, পূর্ব বর্ধমান: তৃণমূল কংগ্রেস সহ বিরোধী দলের সাংসদদের সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে শনিবার কার্জন গেট চত্বরে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে একটি ধিক্কার সভার আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, পূর্ব-বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়,চেয়ারম্যান তথা মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী, সাংসদ সুনীল মন্ডল,জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন তথা ব্লক সভাপতি কাকলি গুপ্ত, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস, বিধায়ক তথা রাজ্য যুব সভাপতি অলোক মাঝি, বিধায়িকা শম্পা ধারা, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলাম, জেলা পরিষদের মেন্টর তথা এস টি সেলের রাজ্য সভাপতি ও মুখপাত্র দেবু টুডু, জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস, ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি স্বরাজ ঘোষ,যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার সহ বিভিন্ন নেতৃত্ব।
এদিনের সভায় দেবু টুডু কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তোপ দেগে বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে খুন করার চক্রান্ত করছে। সংসদে গ্যাস-কান্ডে নাম জড়ানো বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহা কে এখনো কেন গ্রেফতার করা হল না? কেন তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?এরই প্রতিবাদে যখন ভারতের সব বিরোধী দলগুলি আন্দোলন করছে, তখনই সেখানে সকল সাংসদকে বহিষ্কার করা হল। যাতে নির্দ্বিধায় কিছু অনৈতিক বিল্ কে পাস করানো যেতে পারে।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় পঞ্চান্ন হাজার গরীব মানুষের আবাস যোজনার টাকা এবং প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষের ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র সরকার অন্যায় ভাবে আটকে রেখেছে। অথচ কেন্দ্রের আইনই বলে ১০০ দিনের কাজের ১৫ দিনের মধ্যেই সেই টাকা দিয়ে দিতে হবে। তাহলে কেন্দ্র সরকার কাজের অনুমোদন দেওয়ার পরেও এখনো কেন বাংলার গরীব মানুষের টাকা আটকে রেখেছে?
বিধায়ক খোকন দাস বলেন, ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিজেপিকে ভোট দেয়নি বলেই কি কেন্দ্র সেই বদলা হিসাবে এই বঞ্চনা করছে ? তারা কেন ভোট দেবে? বাংলার মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এত প্রকল্প কি মানুষ ভুলে যাবে! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই একমাত্র তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। বাগবুল ইসলাম বিজেপির চক্রান্তের বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ করে বলেন, শুধু বাংলা নয়, সারা ভারতবর্ষের যেসব রাজ্যে অ-বিজেপি সরকার আছে, তাদের ক্ষেত্রে তারা অর্থনৈতিক অবরোধ করছে। একটাই উদ্দেশ্য, আগামী লোকসভা নির্বাচনে মানুষকে ভয় দেখানো। বাংলায় ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের গ্লানি তারা ভুলতে পারছে না।
বাংলার বি জে পি নেতাদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, যেসব বিজেপি নেতা বাংলায় বিজেপির সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখছেন, তারাই সারা বাংলার মানুষকে বঞ্চনা করার জন্য দিল্লিতে দরবার করছেন। ভাবুন একবার। তিনি আরও বলেন, বিজেপি এখন তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছে। কারণ, গোটা ভারতবর্ষের সব বিরোধী দল আগামী লোকসভা কে সামনে রেখে মমতা ব্যানার্জীকে কেন্দ্র করে জোট বাঁধছে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ফলাফল ভালো হবে না। কারণ, বিজেপি একটাও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে, বেকারি বাড়ছে, দারিদ্র্য বাড়ছে। অথচ বিজেপি সরকারের কোন কর্মসূচি নেই এ ব্যাপারে।
নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, বিজেপি ততই ধর্মের ধুয়ো তুলে মানুষকে উম্মত্ত করার চেষ্টা করবে। তাই মানুষের কাছে আবেদন, বিজেপির হীন চক্রান্তের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, গরিব-চাষী-মজুর-শ্রমিক নীতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের হাতকে শক্ত করুন। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে শুধু বাংলা থেকে নয়, ভারতবর্ষ থেকেই নিশ্চিহ্ন করুন।