কলকাতা, ২১ ডিসেম্বর: রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের জন্য চার শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার অ্যালেন পার্কে বড়দিনের উৎসব উদ্বোধন করতে গিয়ে এই ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের ১৪ লক্ষ সরকারি কর্মীর জন্য এই মহার্ঘ ভাতা বাবদ ২৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে রাজ্যে চলছে দীর্ঘ আন্দোলন। তার মধ্যেই মমতার এই ঘোষণা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তবে এদিনের পর সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বেড়ে হল ১০ শতাংশ। তবে একদমই মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আগ্রহী নন আন্দোলনকারীরা, এমনটাই সাফ জানিয়েছেন তারা। তাদের দাবি অনুযায়ী কেন্দ্রের সঙ্গে এখনও ৩৬ শতাংশ পার্থক্য থেকে যাচ্ছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের। এই ফারাকের অবিলম্বে পূরণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিন রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উপর জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে, জানালেন ইউনেস্কোর তরফে পশ্চিমবঙ্গকে পর্যটনের মূল গন্তব্যস্থল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মঞ্চ থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য জুড়ে একগুচ্ছ পর্যটন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ৩৬তম বিষ্ণুপুর মেলা, বাঙ্গুর থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত রাস্তার সৌন্দর্যকরণ(ঝিল্লিকা), হাওড়ার গড়চুমুকে চিড়িয়াখানা, পুরুলিয়ার ঝাড়গ্রামে ট্যুরিজম কমপ্লেক্স, হুগলীর দেবানন্দপুরে শরৎচন্দ্রের জন্মস্থান সংস্কার করে জন সাধারণের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা করেন মমতা।
বৃহস্পতিবার মঞ্চ থেকেই ভার্চুয়ালী বো ব্যারাকে ক্রিসমাসের আলোকসজ্জার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বড়দিন ও নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “আজ থেকে শুরু হল ১৩তম ক্রিসমাস উৎসব। ২১ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে এই উৎসব চলবে। প্রত্যেক বছরের মত এবছরও বিভিন্ন শিল্পীরা এখানে অনুষ্ঠান করবেন। এই উৎসবের অঙ্গ হিসেবে অন্যান্য বারের মত এবারও পার্ক স্ট্রিটকে আলোর বর্ণমালায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি, সেন্ট পলস, ক্যাথিড্রাল চার্চ ও সংলগ্ন এলাকা আলো দিয়ে সাজান হয়েছে। বো-ব্যারাকেও ক্রিসমাস উপলক্ষে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।”
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, কলকাতার আর্চবিশপ রেভারেন্ড টমাস ডি’সুজা, কলকাতার বিশপ রাইট রেভারেন্ড ড. পরিতোষ ক্যানিং, কলকাতার নগরপাল বিনীত কুমার গোয়েল, মুখ্য সচিব ডঃ হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্র সচিব বি পি গোপালিকা, পর্যটন দপ্তরের প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, কলকাতা পৌরসংস্থার কমিশনার বিনোদ কুমার, মেয়র পারিষদ (পার্কিং) দেবাশিষ কুমার, কলকাতা পুরসভার চেয়ারম্যান ও সাংসদ মালা রায় এবং অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা।