পারিজাত মোল্লা: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৪২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের প্যানেল জমা দেওয়ার নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে প্যানেল আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশের উপর ৪ সপ্তাহের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ।গত ১২ ডিসেম্বর জেলা ভিত্তিক নিয়োগের প্যানেল আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চ।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এই মামলায় এদিন বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, -‘ সিবিআই এবং ইডি যেভাবে তদন্ত করছে সেভাবেই তদন্ত চালিয়ে যাবে’। এই মামলাটি গত ২০১৪ সালের টেটের নিয়োগ সংক্রান্ত । ওই বছরের টেটের প্রথমে ২০১৬ সালে এবং দ্বিতীয় দফায় ২০২০ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
দুই নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি অমৃতা সিনহা পর্ষদকে প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর পর্ষদ হলফনামা দিয়ে জানায় যে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে একটি প্যানেল প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দাবি মানতে নারাজ ছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেক্ষেত্রে দু’টি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ প্যানেল দেখতে চেয়েছিল সিঙ্গেল বেঞ্চ। এ প্রসঙ্গে প্যানেল প্রকাশ না করে পর্ষদ কি কাউকে আড়াল করতে চাইছে? এই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি সিনহা।
একইসঙ্গে বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন, এমন ৯৪ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।গত ১২ ডিসেম্বর প্যানেল প্রকাশ করতে না চাওয়ার জন্য পর্ষদকে তিরস্কার করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছে প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদ। বুধবার ছিল সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি। সিনহার নির্দেশের ওপর ডিভিশন বেঞ্চ অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে।গত ১৭ ডিসেম্বর আদালতকে পর্ষদ জানায়, -‘প্যানেল প্রকাশ্যে আনার নিয়ম নেই’।
এর পরই বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, -‘ কী লুকাতে চাইছে পর্ষদ?’ আগে অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে প্যানেল প্রকাশ করা গেলে এখন সমস্যা কোথায়? সেই প্রশ্নের কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি পর্ষদ। উলটে পরদিন ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় তারা।এদিনের শুনানিতে পর্ষদের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, যে -‘ ২ জন মামলাকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা তাঁরা টেট উত্তীর্ণ কি না সেটাই নিশ্চিত নয়।
এর পর বিচারপতি সৌমেন সেনের বেঞ্চ জানায়, -‘অভিযোগকারীরা টেট উত্তীর্ণ কি না? তা প্রথমে যাচাই করে দেখা হবে। তার পর সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের ওপর রায় দেবে ডিভিশন বেঞ্চ’। মামলাকারীরা টেট পাশ করেছে কি না? তা আগামী ৩ জানুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ । সঙ্গে বিচারপতি সিনহার নির্দেশে ৪ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৪ জানুয়ারি মামলাটির ফের শুনানি হবে।