পুবের কলম প্রতিবেদক: বড়দিন আর বর্ষবরণের দিনে মদ্যপ হয়ে গাড়ি চালানোর প্রবণতা রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। প্রতিবছরই এই সময়ে একটা না একটা ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় মদ্যপ হয়ে গাড়ি চালানোর কারণেই ঘটেছে দুর্ধটনা। তাই, এবার এই দুই দিন রাতে মদ্যপ ব্যক্তিদের গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার ঘটনা রুখতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। এই বিধিনিষেধ আরোপিত থাকবে শুধুমাত্র ২৫ ও ৩১ ডিসেম্বরের জন্য।
জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, এই দুই দিন অতিরিক্ত মদ্যপান করলে কাউকেই গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসতে দেওয়া হবে না। অন্য গাড়ি ডেকে তাঁকে বাড়ি পাঠানো হবে। কেউ যদি গাড়ি ছেড়ে যেতে আপত্তি জানায়, তাহলে চালক ভাড়া করে তাঁকে বাড়ি পাঠানো হবে। শহর-শহরতলির সমস্ত বার, পাব, রেস্তরাঁকে এবং হোটেল-রেস্তরাঁ সংগঠনকে এই মর্মে নোটিস পাঠানো শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ।
প্রতিবারই বড়দিন এবং বছরের শেষ দিন কলকাতার বার, পাব ও রেস্তরাঁতে ভিড় বাড়ে। কে কতটা মদ্যপান করবেন, তা নিয়ে এই দুই দিন কার্যত অঘোষিত এবং অলিখিত প্রতিযোগিতা চলে। এই প্রতিযোগিতা পুলিশের পক্ষে ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে, অতিরিক্ত মদ্যপান করার কারণে হওয়া দুর্ঘটনা রুখতে তৎপর কলকাতা পুলিশ। মদ্যপ ব্যক্তিরা যাতে কোনওভাবেই গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসতে না পারে তার জন্য পদক্ষেপ নিতে কলকাতার হোটেল-রেস্তরাঁ সংগঠনের কাছে সহায়তা চেয়েছে কলকাতা পুলিশ। কারণ, একমাত্র তাঁরাই পুলিশকে এই বিষয়ে যথাযথ খবর দিতে পারবেন যে কে বেশি মদ খেয়েছে আর কে কম খেয়েছে, কে গাড়ি চালানোর মতো অবস্থায় আছে আর কে গাড়ি চালানোর মতো অবস্থায় নেই। যদি দেখা যায় মদ্যপ ব্যক্তি গাড়ি চালানোর মতো অবস্থায় নেই তাহলে, পাব, বার বা হোটেলে থাকা বেয়ারারাই গাড়ি বা চালক ডেকে দেবেন।
ইতিমধ্যেই গাড়ির চালক সরবরাহের জন্য অ্যাপ চালু করেছে একটি বেসরকারি সংস্থা। তাদের মাধ্যমেই চালক ভাড়া করে মদ্যপ ব্যক্তিকে নিজের গাড়ি সমেত ফেরত পাঠানো হবে। তার জন্য ওই ব্যক্তিকে মেটাতে হবে চালকের মজুরি, সঙ্গে তাঁর গন্তব্যে ফেরার খরচ। গোটা বিষয়টিতে থাকবে কড়া পুলিশি নজরদারি। একইসঙ্গে, মদ খেয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে জরিমানার পরিমাণও বাড়িয়েছে কলকাতা পুলিশ। পাশাপাশি, শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে লাগাতার ব্রিদ অ্যানালাইজার নিয়ে পরীক্ষা চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে। গাড়ির চালক ওই যন্ত্রে ফুঁ দিলেই বোঝা যাবে তিনি মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছেন কিনা।