পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: চপ্পল পরে উচ্চবর্ণ অধ্যুষিত গ্রামে ঢুকতে পারবে না দলিতরা। চায়ের দোকানে চা খেতে পারে, কিন্তু গ্লাস বা কাপে নয়। ডিসপোজেবল কাগজের কাপে চা খেতে হয় তাদের। তামিলনাডুর দুই গ্রামের পরিস্থিতি দেখলে মনে হয়, সেখানকার মানুষ এখনও স্বাধীনতার আগের জমানায় বাস করছেন। যখন কোমরে ঝাঁটা আর গলায় কলসি বেঁধে ঘুরতে হত দলিতদের।
মাদাথুকুলাম শহরের রাজভুর ও মাইওয়াদি গ্রামে দলিতরাই বাস করেন। তাদের নিজেদের গ্রাম ছাড়া উচ্চবর্ণদের গ্রামে কোনওদিনও তারা জুতো–চপ্পল পরে ঢুকতে পারে না। প্রবল রোদ, কাদা বা ঠান্ডা সব অবস্থাতেই তাদেরকে খালি পায়ে যেতে হয় বাবুদের গ্রামে। এই নিয়ে দলিত পরিবারের যুবকরা প্রশ্ন করলে তাদেরকে ধমকানো হয়।
এই মাসের শুরুতে দ্রাবিড় বিদুথালাই খাজগাম ও তামিল পুলিগাল কাচির কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল ওই এলাকায় গিয়ে বর্ণ বৈষম্যের এই ভয়ঙ্কর ছবি সামনে আনে। এই প্রতিনিধি দল তিরুপ্পুর জেলা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়। ঘটনার তদন্ত করতে তারা একটি টিম গঠন করেছে। উদুমালাইপেটের রাজস্ব উন্নয়ন আধিকারিক যশবন্ত কান্না এই বৈষম্য দূর করতে একটি আলোচনার আয়োজন করছেন। ওই এলাকার উচ্চবিত্ত ও দলিতদের প্রতিনিধীদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। যাদে তাদের সঙ্গে বসে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।
ওই গ্রামের এক দলিত এম নাগরাজন জানিয়েছেন, ওই এলাকার বেশিরভাগ দলিত বাস করে মাদাথুকুলামে। রাজাভুর ও মাইবাদি গ্রামের কৃষিজমিতে তারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। এটা এই এলাকার অলিখিত নিয়ম যে তারা গ্রামে জুতো পরে ঢুকতে পারবেন না। গ্রামবাসীদের মতে, কয়েক শতাব্দী ধরে এই নিয়ম চলছে। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে তারা হিংসার শিকার হবে বলে চুপ থাকে। গ্রামে নতুন কেউ এসে চায়ের দোকানে গেলে দোকানদার গল্পের ছলে তাদের জাত নিয়ে প্রশ্ন করে। তারা দলিত বুঝলে কাঁচ বা চিনেমাটির কাপ–গ্লাসে তাদেরকে চা দেওয়া হয় না। ডিসপোজেবল কাগজের কাপে চা বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাদের দিকে। প্রশাসন জানিয়েছে, এই নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করেছে তারা।