পারিজাত মোল্লা: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে উঠে এসএসসি সংক্রান্ত মামলা। চাকরি বাতিলের বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন যে অবস্থান নিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। এদিন জানালো ডিভিশন বেঞ্চ। এসএসসি-কে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ফের রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। স্কুল সার্ভিস কমিশন হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশেই তারা চাকরি বাতিল করেছিল। যদিও এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। ফের এসএসসি-কে তাদের ‘অবস্থান’ জানাতে সময়সীমা বেঁধে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। চাকরি বাতিলের বিষয়ে এসএসসি-কে নিজেদের অবস্থান জানাতে হবে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে। এ বিষয়ে তাদের সুনির্দিষ্ট ‘অবস্থান’ বোর্ড মিটিং করে পাঁচ দিনের মধ্যে আদালতে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চাকরি বাতিল নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দেওয়া আগের হলফনামা এ দিন ফিরিয়ে দেয় বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। বেঞ্চ জানায়, ‘হাইকোর্ট যার পক্ষেই রায় দিক, তার ফলে কেউ না কেউ প্রভাবিত হবে। চাকরিহারাদের মধ্যে আইন অনুযায়ীও অনেক প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। আবার ভুয়ো প্রার্থীও রয়েছে। এই ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অবস্থান কী? তা গত সপ্তাহে সাতদিনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কারণ রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশেই তারা চাকরি বাতিল করেছে। কিন্তু সেটা কোন আইনের বলে করা হল? সেটাই প্রশ্ন ছিল ডিভিশন বেঞ্চের। এদিন রাজ্য যে হলফনামা দিয়েছে, সেখানে ও একই বক্তব্য তাদের। হলফনামায় অসন্তুষ্ট বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। ফের স্কুল সার্ভিস কমিশনকে বোর্ড মিটিং করে পাঁচ দিনের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এদিনের শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, চাকরি বাতিলের ক্ষেত্রে কার উপর ভরসা করছে এসএসসি? নাইসা নাকি, নিজেদের নথি? আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ফের হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের দাবি, ‘নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি-দের চাকরি বাতিল হয়েছিল আদালতের নির্দেশেই। এসএসসি মামলায় বেনিয়মে নিয়োগের জন্য আদালতের নির্দেশের পরেই বাতিল করা হয় চাকরি। কমিশন নিজে থেকে চাকরি বাতিল করেনি বলে জানায় এসএসসি। এরপর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, “আপনাদের সিলেকশন প্রসেস প্রশ্নের মুখে। অবস্থান আপনাদের নিতে হবে। যদি কোনও ভুল নিয়মে নিয়োগ হয়ে থাকে, সেটা সংশোধন আপনাদেরই করতে হবে। এ বার একটা পরিস্কার অবস্থান নিন আপনারা।”
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায় চাকরি বাতিল করেছিল কমিশন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানিতে তারা হলফনামা দিয়ে জানায়, চাকরি বাতিল করা হয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশেই। দু’রকম অবস্থান নেওয়ায় এসএসসির ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ডিভিশন বেঞ্চ।