পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গত দশ বছরে গো বলয়ের রাজ্যগুলিতে যেভাবে সম্ভব হয়েছে মুসলমানদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে বিজেপি সরকার। কিছু কিছু ঘটনা সরাসরি বিজেপি না ঘটালেও বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এসব কাজ করেছে। কখনও ঈদের নামায নিয়ে সমস্যা তো কখনও মসজিদের মাইকের আযান।বেশ কিছু বিজেপি শাসিত রাজ্যে মসজিদ থেকে ইতিমধ্যেই মাইক নামানোর ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছে গেরুয়া দলগুলি।একই চেষ্টা করেছিল বজরং দলের নেতা শক্তি সিংহ জালা। মাইকে মসজিদের আযান নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে গুজরাত হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল শক্তি সিং।এই মামলা খারিজ করে দিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে আদালত।
প্রথমত এটিকে পুরোপুরি ভুল ধারণার উপর ভিত্তি করে দায়ের করা মামলা বলে ডেকেছেন বিচারপতিরা।গুজরাত হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সুনিতা আগরওয়াল ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ পি মেইয়ের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলছিল। প্রধান বিচারপতি সুনিতা আগারওয়াল আবেদনকারীর আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, শব্দ দূষণ কি শুধু আযানের সময় হয়? নাকি পুজোর সময় যে গান বা ভজন হয়, তাতেও শব্দদূষণ হয়?
এরপর বিচারপতি বলেন, শব্দদূষণ একটি বৈজ্ঞানিক বিষয়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেই এটা মাপা সম্ভব। আযানে যে শব্দদূষণ হয়, সেটা প্রমাণ করুন আপনারা। তাহলে বিষয়টি নিয়ে ভাবা যাবে।
আবেদবনকারী বলেছিল, দিনের বিভিন্ন সময় আযানের শব্দে যেমন শব্দদূষণ হয়, তেমনি বয়স্ক ও শিশুদের স্বাস্থ্যেও এর কুপ্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
এর জাবাবে বিচারপতি বলেন, আযান খুব বেশি হলে ৫ মিনিট সময় ধরে হয়। সেটাও হয় খালি গলায়। খালি গলায় আজান দিলে তাতে কিভাবে শব্দদূষণ হয়, সেটা প্রমাণ করুন।আপনারা ডিজে বাজান, সেটার জন্য শব্দদূষণ হয়।আমরা এই ধরণের আবেদন কখনই শুনব না। আযান দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত।দশ মিনিটের কম সময় নেই আযান।
আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, শুধু তো দিনের বেলা নয়, ভোরবেলাতেও আজান হয়, এতে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়।এর জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, মন্দিরের আরতিও সকালে হয়।তাতে কারোর সমস্যা হয় না? আপনি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবেন যে, মন্দিরে যে ঘন্টা বাজে তার শব্দ মন্দির চত্বরেই সীমাবদ্ধ থাকে। তার বাইরে যায় না।
খালি গলার আজান শব্দদূষণ করে এটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আপনারা দিতে পারেননি, এমনটাই বলেন গুজরাত হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সুনিতা আগারওয়াল। এরপর তিনি এই আবেদন খারিজ করে দেন।