পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ১৪০ কোটি মানুষের দোয়া আর উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতায় ৪০০ ঘন্টার উদ্বেগ কাটিয়ে আলোর মুখ দেখেছেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ শ্রমিক।এখন তারা সকলেই ভালো আছেন।মনে মনে বলছেন, ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’।
উদ্বেগের ৪০০ ঘন্টা কাটিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসার পর ঝাড়খন্ডের শ্রমিক অনিল বেদিয়া (২২) জানান, প্রথম দশ দিন তারা সুড়ঙ্গের ভেতর পাথর থেকে চুঁইয়ে পড়া পানি আর মুড়ি খেয়েই বেঁচে ছিলেন।
বুধবার উত্তরাখণ্ড থেকে অনিল ফোনে বলেন, প্রথম কয়েকদিন আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, যে আমরা কোনওদিনও বাইরে বেরোতে পারব না। সুড়ঙ্গের নিচেই আমাদের কবর হয়ে যাবে।তৃষ্ণা মেটাতে পাহাড়ের গা থেকে চুঁইয়ে পড়া জল চেটে চেটে খেতাম আমরা।
অনিলের বাড়ি, রাঁচির অদূরে খিরাবেদা গ্রামে। সেখান থেকে মোট ১৩ জন ভাগ্যের সন্ধানে গেছিলেন উত্তরাখণ্ড। তারা সকলেই এই সুড়ঙ্গে কাজ করতেন। কিন্তু যেদিন ধস নামে, সেদিন ওই ১৩ জনের তিন ভাগের এক ভাগ শ্রমিক ভেতরে ছিলেন। বাকিরা সুড়ঙ্গের বাইরে।
অনিল জানান, প্রথম ৭০ ঘন্টা আমরা ভাবতে পারিনি যে বাঁচতে পারব। কিন্তু ৭০ ঘন্টার পর যখন বাইরে থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হল, তখন বাঁচার আশা জাগল।অনিল বলেন, আমাদের দুই সুপারভাইজারই আমাদেরকে তৃষ্ণা মেটাতে পাহাড় থেকে চুঁইয়ে পড়া পান করার পরামর্শ দেন।
তাঁর মতে, ১০ দিন পর যখন তাদেরকে কলা, আপেল, কমলা সহ গরম খাবার– যেমন ভাত, ডাল, রুটি, জল পাঠানো হয়েছিল, তখন মনের মধ্যে বেঁচে থাকার আশা জাগছিল।অনিল বলেন, বেঁচে থাকার তীব্র ইচ্ছায় আমরা সকলে মিলে সুড়ঙ্গের মধ্যে একসঙ্গে প্রার্থনা করতাম। শেষ পর্যন্ত ঈশ্বর আমাদের ডাক শুনেছেন।যতদিন আমরা এখানে আটকে ছিলাম, আমার মা চুলো পর্যন্ত জ্বালাননি। প্রতিবেশীরা যা দিত, তাই খেয়ে থাকত আমার পরিবার।
উল্লেখ্য, সুড়ঙ্গে যারা আটকে পড়েছিলেন, সেই ৪১ জনের মধ্যে ১৫ জনই ঝাড়খন্ডের রাঁচি, গিরিডি, খুন্তি পশ্চিম সিংভূমের বাসিন্দা। তাই মঙ্গলবার উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার পর থেকে এই সব এলাকায় বইছে উৎসবের হাওয়া।