পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বড়সড় আর্থিক জরিমানার হুশিয়ারি দেওয়া হলো রাজ্য সরকার কে।কেন্দ্রের প্রকল্প স্থগিত করে রাজ্যের নামে প্রকল্প চালানো হচ্ছে! এই দাবিকে সামনে রেখেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এদিন কমন সার্ভিস সেন্টার সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার হুঁশিয়ারি দিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ।।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প ‘কমন সার্ভিস সেন্টার’ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, -‘ এ রাজ্যে প্রায় ৪০ হাজার সিএসসি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত স্তরে সাধারণ মানুষকে সাহায্যার্থেই এই প্রকল্প নিয়ে এসেছিল কেন্দ্র। এর মাধ্যমে কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ সুবিধার কথা জানতে পারতেন সাধারণ মানুষ। একাধিক প্রকল্প সম্পর্কে সহজেই জানতে পারত মানুষ’।
মামলাকারী সুকান্ত হাইকোর্টে দাবি করেন যে, -‘ ২০২০ সালে রাজ্য সরকার এই পরিষেবা উঠিয়ে দেয়। বদলে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র নামে একটি সেন্টার চালু করা হয়’। এই অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা মঙ্গলবার মামলাটি ওঠে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। এই মামলায় আদালতের নির্দেশ, -‘ আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে হবে। না হলে জরিমানা দিতে হবে’।এই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকেকেই জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দিলেন।কমন সার্ভিস সেন্টার নামে ওই প্রকল্পটি চালু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পে কী কী সুযোগ সুবিধা মেলে তার ব্যাপারে পঞ্চায়েত স্তরে সাধারণ মানুষকে সচেতন করাই ছিল কমন সার্ভিস সেন্টারের লক্ষ্য । তবে বঙ্গ বিজেপির দীর্ঘদিনের অভিযোগ, -‘ সেই প্রকল্প বন্ধ করে দিয়ে রাজ্য ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্র’ নামে সেই একই প্রকল্প চালু করেছে।সেই প্রকল্পের বিপুল টাকা নয়ছয় করা হয়েছে’, এই অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, -‘ প্রায় ৪০,০০০ কমন সার্ভিস সেন্টার রাজ্য নোটিফিকেশন দিয়ে বন্ধ করে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে পরিণত করেছে’।সেই মামলার শুনানিতে এদিন রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করেছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে রাজ্যকে।
অন্যথায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।শুনানি চলাকালীন রাজ্যের প্রতি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, “সব কিছুকে রাজনীতির রঙ না দেওয়াই ভাল। এটা পিপলস ওয়েল ফেয়ার স্কিম। এই ক্ষেত্রে রাজ্যের ব্যবহার ডিজিটাল ইন্ডিয়ার বিরোধিতা করার মতো।” এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ১৯ ডিসেম্বর।’
আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে রাজ্য। নাহলে জরিমানার সেই টাকা দিতে হবে বলে নির্দেশ আদালতের। এদিন হাইকোর্টে রাজ্যের তরফ থেকে হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য আরও সময় চাওয়া হলে ডিভিশন বেঞ্চ জানায় ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে হবে হলফনামা । এইমামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৯ ডিসেম্বর রয়েছে বলে জানা গেছে ।এখন দেখার রাজ্য সরকার এই মামলায় হলফনামাতে কি উল্লেখ করে?