পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: পরিকল্পনা করে প্রেমিককে বাড়িতে ডেকে এনে খুন। তরুণীর সঙ্গে এই খুনে মদদ দিলেন তার দাদাও। খুনের পর ভাড়াবাড়িতে তালা দিয়ে চম্পট দিলেন দুই ভাই বোন। পরে তরুণীকে দুর্গাপুর থেকে আর মালদহ থেকে অভিযুক্ত দাদাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম ছোটন দুবে। সে বিহারের সাহারানপুরের বাসিন্দা ছিলেন। পুলিশ তদন্তে নেমে ফরিদপুরের বাউরিপাড়ার বাসিন্দা গৌতম সাহার বাড়ি থেকে ছোটনের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযুক্ত তরুণীর নাম পূজা। তিনি বিবাহিত ছিলেন। বেশ কয়েকবছর আগে কিশোর পাণ্ডে নামে এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিশোর কর্মসূত্রে থাকেন পুরুলিয়ায়। পূজা ছোটনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু স্ত্রীয়ের বিবাহ-বহির্ভূত কথা জানতে পারেন কিশোর। দুজনের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। এদিকে পরকীয়া থেকে বের আসতে গিয়ে ছোটনের বাধার মুখে পড়েন পূজা। এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাজস্থান থেকে পূজার দাদা মৃত্যুঞ্জয় বোনের বাড়ি বেড়াতে আসেন। দাদাকে সব কথা খুলে বলেন পূজা। তিনি জানান তাকে ব্ল্যাকমেল করছে ছোটন। তখনই দাদা-বোন মিলে ছোটনকে খুনের ফন্দি আঁটে। এর পরই বিহার থেকে যুবককে নানাভাবে টোপ দিয়ে ডেকে আনেন পূজা।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে ছোটনকে নিয়ে আসেন ওই যুবতী। ওই বাড়িতে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন পূজার দাদা মৃত্যুঞ্জয়। দাদা আর বোন মিলে ছোটনকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পুলিশের সন্দেহ হয় বিহারের যুবকের দুর্গাপুরে আসা নিয়ে। ছোটনের কললিস্ট দেখে সেখানে দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগ বাগানপাড়ার বাসিন্দা পূজা পাণ্ডের মোবাইল নম্বর মেলে। ছোটনের সঙ্গেই সব থেকে বেশি কথা বলতেন পূজা। এর পরেই পূজাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। প্রথমে অস্বীকার করলেও দাদা মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে মিলে ছোটনকে খুনের কথা স্বীকার করে পূজা।
তদন্তে আরও জানা গেছে, ছোটনকে খুন করার পর বাড়ির সদর দরজা বন্ধ করে ঘরের বাইরে গিয়েছিলেন বাড়িওয়ালা। ফলে সারারাত মৃতদেহের সঙ্গে একই ঘরে ছিলেন পূজা আর মৃত্যুঞ্জয়। সকালে সদর দরজার তালা খুলতেই ছোটনের দেহ ফেলে রেখে ঘর তালাবন্ধ করে পূজা এবং মৃত্যুঞ্জয় বেরিয়ে যান। পূজার ধান্ডাবাগের বাড়িতেই ছিলেন তাঁর দাদা। শুক্রবার সকালে তিনি দুর্গাপুর ছাড়েন।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) কুমার গৌতম জানিয়েছেন, পূজা পুলিশি জেরায় জানিয়েছেন ছোটনের মোবাইলে তাঁর বেশ কিছু নগ্ন ছবি ছিল। সেই ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছিলেন ছোটন। সেই কারণে এই খুনের পরিকল্পনা।